শারমিন আক্তার সুপ্তার কিছুটা আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে। ম্যাচটা যদি আন্তর্জাতিক হতো, তাহলে অনন্য এক কীর্তির জন্য তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচে নারী ক্রিকেটারদের ইতিহাসের ঢুকে যেতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি, যা করেছেন তাই বা কম কীসে! তার ব্যাট থেকে এলো সেঞ্চুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার এমন নৈপুণ্যে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাঘিনীরা।
জিম্বাবুয়ের হারারেতে গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রকে ২৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২২ রান করেছে বাংলাদেশ। জবাবে ১১৭ বল বাকি থাকতে যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ৫২ রানেই গুটিয়ে যায়।
শারমিন আক্তারের অনবদ্য কীর্তিতে এদিন বাংলাদেশও গড়েছে অনন্য নজির। ৫০ ওভারের ম্যাচে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোর তুলতে সক্ষম হয়েছে টাইগ্রেসরা। এবারই প্রথম তিনশ রান পেরিয়েছে তারা। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২১১ রান। ২০১৯ সালে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই রান করে ১ বল বাকি থাকতে নাটকীয় জয় পেয়েছিল তারা।
এদিন ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকেছেন শারমিন। শেষ পর্যন্ত খেলেন হার না মানা ১৩০ রানের ইনিংস। ১৪১ বলের ইনিংসটি সাজাতে ১১ চার মেরেছেন তিনি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংস যৌথভাবে সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদের দখলে। ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে অপরাজিত ৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সালমা। পরের ম্যাচে একই ভেন্যুতে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রুমানাও করেন ৭৫ রান। আর শারমিনের আগের সেরা ছিল ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কক্সবাজারে খেলা ৭৪ রানের ইনিংস।
ইনিংসের ৪৩তম ওভারের প্রথম বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ২৫ বছর বয়সী শারমিন। যুক্তরাষ্ট্রের বাঁহাতি পেসার টারা নরিসকে চার মেরে মাইলফলক স্পর্শ করে ইতিহাস গড়েন তিনি। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে তার লাগে ১১৭ বল। তিনি ফিফটি ছুঁয়েছিলেন ৫৫ বলে।
শারমিনকে অবশ্য দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন মুর্শিদা খাতুন, অধিনায়ক নিগার সুলতানা ও ফারজানা হক। মুর্শিদার সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৯৬ রান তোলেন শারমিন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে নিগারের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি। তবে বাঘিনীদের বড় সংগ্রহের ভিতটা তৃতীয় উইকেট জুটিতে। ফারজানার সঙ্গে ১৩৭ রানের জুটি গড়েন শারমিন। ফারজানা ৬২ বলে ৬টি চারে করেন ৬৭ রান। ৫৬ বলে মুর্শিদা ৪৭ করেন রান। নিগারের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া বিশাল লক্ষ্যে শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। এক অধিনায়ক সিন্ধু শ্রীহার্শা ও তারা নরিস ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি। ফলে বিশাল জয়ই পায় বাঘিনিরা। নরিস ১৬ ও সিন্ধু ১৫ রান করেন।
এদিন বাংলাদেশের সব বোলারই দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। ১০ ওভার বল করে মাত্র ১০ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান সালমা। ৭ ওভার বল করে ১১ রানের খরচায় ২টি শিকার রুমানার। ৩ ওভার বল করে ৫ রানের বিনিময়ে ২টী উইকেট পান ফাহিমা খাতুন।