বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করায় ‘নির্বাসনে’ থাকা প্রখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের অ্যাকাউন্ট সাত দিনের জন্য বন্ধ করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। গতকাল সোমবার তার আরেক সামাজিকমাধ্যম টুইটারে তসলিমা এ তথ্য জানান। তসলিমা টুইটে বলেন, সত্যি বলার অপরাধে ফেসবুক আমাকে আবার সাত দিনের জন্য নিষিদ্ধ করল। পরে আরও এক টুইটে তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
তসলিমা লেখেন- ‘ফেসবুক আমায় নিষিদ্ধ করেছে কারণ আমি লিখেছিলাম হিন্দুরা হনুমানের কোলের ওপর কোরআন রেখেছেন ভেবে কট্টরপন্থিরা বাংলাদেশি হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে ভাঙচুর করেছেন; কিন্তু যখন জানা গেল হিন্দুরা নন ইকবাল হোসেন এই কাজটি করেছেন, তখন আর কট্টরপন্থিদের কেউ ইকবালের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করেননি বা কোনো পদক্ষেপ নেননি।’ এর পরের টুইটেই আবার ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তসলিমা। তিনি লেখেন- ‘হিন্দুরা আজমির শরিফ দরগা, নিজামউদ্দিনের মতো জায়গায় প্রার্থনা করেন, সালমান খান গণেশ চতুর্থী পালন করেন, শাহরুখ খান সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরে প্রার্থনা করেন। এটাই ভারতবর্ষ।’
সার্বিক বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলেন, ‘আমি ফেসবুকে কিছু লিখলে জিহাদিরা রিপোর্ট করে আর ওদের কথা শুনে ফেসবুক আমায় বারবার নিষিদ্ধ করে। আমার মতো যারা মানবাধিকার নিয়ে সরব হন, তাদের অ্যাকাউন্ট কেন সুরক্ষিত রাখে না ফেসবুক? আজ জিহাদিদের জন্যই ২৭ বছর ধরে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছি আমি। আমার মতো মানুষদের কিছু বলার থাকলে ফেসবুকেই সেই মতপ্রকাশ করি। এই জায়গাটাও যদি নষ্ট হয়ে যায়, তা হলে আর কিছুই বলার নেই।’
উল্লেখ্য, এর আগেও সপ্তাহ তিনেক আগেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে লেখার অপরাধে তসলিমার অ্যাকাউন্ট সাত দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ফেসবুক।
সংবাদ সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা