ক্ষুধার তাড়নায় দাদী বিক্রি করতে চান নাতনীদের

খাবার এবং দৈনন্দিন খরচ জোটাতে না পেরে এক বৃদ্ধা নিজের দুই নাতনীকে বিক্রি করতে চেয়েছেন। আফগানিস্তানের পার্বত্য হিন্দুকুশ অঞ্চলের ঘোর প্রদেশে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

ওই এলাকার রুহসানা সামিমি (৫৪) নামে ওই বৃদ্ধা তার দুই নাতনীকে বিক্রি করে দিতে চান। শিশু দুটির বয়স মাত্র চার ও ছয় বছর। জেনেত ও জিবা নামে দুই নাতনীকে বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার জোটাতে চান সামিমি।

তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্যনক্ষম মানুষটি হলো সামিমির ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় পরিবারটি এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে। এদিকে টাকার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে তিনি।

রুহসানা সামিমি জেনেতকে ২ লাখ আফগানি মুদ্রা (২২০০ মার্কিন ডলার) এবং জিবাকে ১ লাখ আফগানি মুদ্রায় (১১০০ মার্কিন ডলার) বিক্রি করতে চান বলে জানানো হয়েছে। সামিমি বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে তাদের বিক্রির চেষ্টা করছেন তিনি কিন্তু এখন পর্যন্ত একজন ক্রেতাও আসেনি তাদের কিনতে।

চরম হতাশা নিয়ে রুহসানা সামিমি সংবাদসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, পরিবার-পরিজন নিয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। কিন্তু আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে সরকারি লোকজন কেউ তাদের এক মুঠো চাল বা খাবার দিয়ে সাহায্য করতে আসেনি। এই অবস্থায় নিজের নাতনীদের বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই তার কাছে।

দুর্ভিক্ষের কবলে এখন গোটা আফগানিস্তানের অধিবাসীরা। কয়েক বছরের নজিরবিহীন খরায় সৃষ্টি হয়েছে এ দুর্ভিক্ষ। পরিবারের সদস্যদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবারগুলো। খাবার কেনার জন্য নিজের সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে বাবা-মায়েরা। জাতিসংঘের মতে, তীব্র খরায় শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই ঘরবাড়ি ছেড়েছেন অন্তত ২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ। আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি অর্থাৎ ২ কোটি ২৮ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে যাচ্ছে।

এর মধ্যে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের ৯৫০ কোটি ডলার জব্দ করেছে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ায় ধীরে ধীরে দুর্ভিক্ষের দিকে এগোচ্ছে আফগানিস্তান।

সংবাদ সূত্রঃ সংবাদসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি

Scroll to Top