আসরের প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত নেদারল্যান্ডস

রোমাঞ্চকর সব ঘটনার দেখা টি২০ বিশ্বকাপের প্রতি আসরেই মেলে, হয়ে থাকে বিভিন্ন রেকর্ড। তার ব্যতিক্রম হলো না এবারের আসরেও। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিনেই আসরের প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিক করার নজির গড়েন আয়ারল্যান্ডের ডানহাতি পেসার কার্টিস ক্যাম্পার। ইতিহাস গড়া ম্যাচে আয়ারল্যান্ড সাত উইকেটে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডসকে।

গতকাল সোমবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে নেদারল্যান্ডস ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ডাচ্‌দের ১০৬ রানে অলআউট করে ২৯ বল হাতে রেখেই তিন উইকেট হারিয়ে আইরিশরা পৌঁছে যায় নির্ধারিত লক্ষ্যে।

দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ২০১৪ সালের পর ১০ ম্যাচে জয় সাতটিতে! কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে আয়ারল্যান্ড প্রমাণ করে ছাড়ল, টি২০তে তাদের সামর্থ্য কতখানি। \’আন্ডারডগ\’ হয়েও টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আইরিশরা।

শুধু হ্যাটট্রিক করেই থেমে থাকেননি আইরিশ পেসার কার্টিস ক্যাম্পার। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের দশম ওভারে এসে পরপর চার বলে চার উইকেট নিয়ে গড়েছেন ইতিহাসও। বিশ্বের প্রথম বোলার হিসেবে টি২০ বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকসহ টানা চার বলে চার উইকেট নিলেন ২২ বছর বয়সি এই ডানহাতি পেসার। যাতে দুই উইকেটে ৫১ রান তোলা নেদারল্যান্ডস দশম ওভারে ওই রানেই হারিয়ে বসে ছয়টি উইকেট। ক্যাম্পার ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে কলিন অ্যাকারম্যানকে (১১) উইকেটকিপার রকের গস্নাভসবন্দি করার পরের দুই বলেই রায়ান টেন ডোয়েচকাট, স্কট এডওয়ার্ডসকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। আর পরের বলে ভ্যান ডার মারওয়েকে সরাসরি বোল্ড করে টানা চার বলে চারটি উইকেট তুলে নিয়ে রেকর্ড বুকে নাম লেখান। এর মাধ্যমে ব্রেটলি\’র পর টি২০ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখান কার্টিস ক্যাম্পার। ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিরল কীর্তি গড়েন অজি স্পিড স্টার। এ ছাড়া টি২০ আন্তর্জাতিকে এর আগে ২০১৯ সালেই এ রকম দুটি ঘটনার নজির উপভোগ করে ক্রিকেট-বিশ্ব। যার একটি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঘটান আফগান স্পিনার রশিদ খান, আর অপরটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করে দেখান লংকান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। এর মধ্যে ওয়ানডে ও টি২০তে একবার করে চার বলে চার উইকেট নিয়েছেন মালিঙ্গা।

এদিকে দশম ওভারে ক্যাম্পারের হ্যাটট্রিকের পর আরও একবার হ্যাটট্রিকের কবলে পড়ে ডাচ্‌রা। ঠিক ১০ ওভারের মাথায় অর্থাৎ নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষটিতে গিয়েও টানা তিন বলে তিনটি উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। তবে এবার আর কৃতিত্ব পাননি কোনো বোলার। এটাকে বলা যায়, দলগত হ্যাটট্রিক। কারণ, ওই ওভারের শেষ তিন বলের চতুর্থ ২১ রান করা ডাচ্‌ অধিনায়ক পিটার সিলারকে ক্যাচ আউটের মাধ্যমে ফেরান আডায়ের। পঞ্চম বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন ১১ রান করা ভ্যান বীক। আর শেষ বলে গেস্নাভারকে হ্যাটট্রিকম্যান ক্যাম্পারের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান আইরিশ পেসার।

যাতে শেষ পর্যন্ত ১০৬ রান তুলেই গুটিয়ে যায় কমলা শিবির। আইরিশ বোলিং তান্ডবের মধ্যে ফিফটি হাঁকিয়ে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন ওপেনার ম্যাক্স ও\’ডৌড। তার ৪৭ বলের এই ইনিংসে ছিল সাতটি চারের মার। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন ডাচ্‌ অধিনায়ক পিটার সিলার। আইরিশ বোলারদের মধ্যে ডাবল হ্যাটট্রিক করা (চার বলে চার উইকেট নেওয়াকে ক্রিকেটের ভাষায় ডাবল হ্যাটট্রিক বলা হয়) কার্টিস ক্যাম্পার ২৬ রান দিয়ে চারটি এবং মার্ক আডায়ের মাত্র ৯ রান দিয়ে তিনটি উইকেট দখল করেন।

Scroll to Top