রাজধানীর ভাটারায় ব্যাংকার দম্পতি কর্তৃক কুলসুম আক্তার (১৪) নামে এক গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিনি গৃহকর্তা আসাদুল রহমান আরিফ ও গৃহকর্ত্রী মাহফুজা রহমানকে অভিযুক্ত করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ০১ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে পুলিশ সঙ্গে না আসায় ভর্তি হতে পারেননি নির্যাতিত ওই গৃহকর্মী।
গৃহকর্মী কুলসুম বলেন, \”আমাদের বাড়ী কিশোরগঞ্জ জেলা তাড়াইল থানার ধলা আজিবপুর গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল রহমান।\”
আহত কুলসুম আক্তার আরও বলেন, \”আমি আট মাস ধরে তাদের বাসায় কাজ করছি। কাজ করতে দেরি হলে আমাকে মারপিট, গরম পানির ছ্যাকা ও খুন্তি গরম করে ছ্যাকা দেওয়া হতো। তারা আমার মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাত করত। তাদের বাসায় যাওয়ার পর থেকেই আমাকে নির্যাতন করত।\”
\”আমি অনেকবার পালাতে চেষ্টা করছি, কিন্তু পারিনি। গতকাল কুড়িল বিশ্বরোডে ওভার ব্রিজের নিচে আমার বোনের কাছে আমাকে দিয়ে যায়। আমি পালাতে পারলে এত নির্যাতনের স্বীকার হতাম না।\”
নির্যাতিতার বোন ফাতেমা বেগম জানান, \”আমার বোন আট মাস আগে কাজে যায়। ছয় হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও তিন মাসে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এখনও অনেক টাকা পাই। আপনারা দেখেন আমার বোনকে কিভাবে নির্যাতন করেছে। এভাবে কোনো সভ্য মানুষ নির্যাতন করে? গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী মিলে আমার বোনকে নির্যাতন করেছে। গতকাল রাতে বোনকে আমার কাছে দিয়ে চলে যায়। আমার বোনের শরীর অনেক খারাপ। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলাম। কিন্তু তারা বলছে পুলিশ ছাড়া ভর্তি নেবে না।\”
অভিযুক্ত আসাদুল রহমান আরিফ জানান, \”আমরা তাকে এখানে কাজ করতে এনেছিলাম। কিন্তু সে পাগলামি করে। আমি কুলসুমের বাবাকে বলেছি যে তার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। গতকাল আমি তার বোনের কাছে ১৪ হাজার টাকা দিয়েছি। এর আগে আমি ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি। আরও ৬ হাজার টাকা দেব।\”
তাকে আপনারা এত নির্যাতন করেছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, \”আমরা তাকে নির্যাতন করিনি।\”
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, \”একটি শিশু নির্যাতনের ঘটনায় হাসপাতালে এসেছে। পুলিশ সঙ্গে না আসায় সে ভর্তি হতে পারেনি। আমরা ভাটারা থানাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছে।\”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাটারা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) পিযুস কুমার সরকার বলেন, \”আমরা বিষয়টি জেনেছি। আমরা তার বাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু সে বাসা পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় বাসা নিয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।\”