দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির নেতা সু চি’র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রেসির (এনএলডি) ঊর্ধ্বতন নেতাদের গ্রেফতারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার পরে গা-ঢাকা দেওয়া এনএলডির প্রভাবশালী নেতাদের অবস্থান জানতে বন্দি নেতাকর্মীদের মারপিট করছেন সেনারা।
সম্প্রতি দেশটির ইয়াঙ্গুন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এক মার্কিন সাংবাদিক সিএনএনকে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশটির নিরাপত্তারক্ষীরা গভীর রাতে অভিযানে দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে এনএলডির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে জেলে রাখছে। এরপর তাদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
মুক্তি পেয়েই মার্কিন সাংবাদিক নাথান মং (৪৪) নির্বাসিত হয়েছেন আমেরিকায়। গত ১৫ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার আগে ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত জান্তাদের গোপন কারাগারে আটকে ছিলেন দুসপ্তাহ। সেখানে থেকেই তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন কী নির্মম নির্যাতন চালিয়ে প্রায় আধমরা করা হচ্ছে এনএলডির গ্রেফতারকৃত কর্মীদের। অবর্ণনীয় নির্যাতন চলছে সেনাবাহিনীর কারাগারে।
গোপন কারাগার দৃশ্য আরও ভয়াবহ! ‘ঠোঁটে, গালে, কপালে, চোখের পাতায় ঠেসে ধরছে জলন্ত সিগারেট। উত্তর পছন্দ হোক আর না হোক, মুখে বুকে কাঁধে লাথির পর লাথি চলছেই। বন্দিদের চোখ বাঁধা থাকলেও, ঘুমানোর কোনো উপায় নেই। ঘুমালে ওরা মারবে কখন। এভাবেই চলতে থাকে দিনের পর দিন। এর মাঝে ধর্ষণের হুমকি তো রয়েছেই।’
সেনাদের ওই গোপন কারাগারে নিজেও অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন নাথান। বীভৎস সেই স্মৃতিমন্থনে তিনি বললেন, ‘ওটা তো কারাগার নয়, যেন সাক্ষাৎ নরক। আমি ভেবেছিলাম সৈন্যদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মরেই যাব।’ সেনাদের নির্মমতা সহ্য করতে না পেরে একবার আত্মহত্যার প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছিলেন বলে জানান নাথান।
তিনি জানান, সেনা-পুলিশ আর বন্দিদের উপস্থিতিতে এমনিতেই কারাগারগুলো থাকে জনাকীর্ণ। তার ওপর পরিবেশ ভীষণ অস্বাস্থ্যকর।