নরসিংদীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫, আহত ৯

বাংলাদেশের মধ্যভাগের ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল নরসিংদীতে পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী আঞ্চলিক সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৯ জন। এদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক। গুরুতর আহত ৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাত ১২টার দিকে পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরার মোড়ে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।

নিহতরা হলো সাভার জেলার আশুলিয়ার ঝিরাবো এলাকার আব্দুর রশিদ স্ত্রী রুবি আক্তার (৩৩), তার মেয়ে রাইমা খান (৫) শ্বাশুরী রোকেয়া আক্তার (৫২), রুবি আক্তারের ভাসুরের স্ত্রী মুক্তি আক্তার (৩০) ও তার ছেলে সাদিকুল (৮)।

আহতরা হলো রাজিয়া (৪০), ইউসুফ মিয়ার ছেলে রশিদ (৪০), জাহের আলীর ছেলে কাজিম উদ্দিন (৪২), সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাইফা (১২), হারুন মিয়ার স্ত্রী শারমীন (৪০) ও মেয়ে ইসরাত জাহান (৮), কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুননাহার (৬০) ও অজ্ঞাত (৪০)।

পুলিশ ও আহতরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে ১৪ জন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি মাইক্রোবাসযোগে আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা সভারের আশুলিয়ার ঝিরাবো এলাকা থেকে সিলেট মাজার জিয়ারত করতে যায়। তারা শাহজালাল ও শাহপরান মাজার জিয়ারত করে জাফলং বেড়াতে যায়। সেখান থেকে আশুলিয়ায় বাড়ি ফিরছিল। মাইক্রোবাসটি পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরা মোড়ে পৌছলে একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে রুবি আক্তার ও তার মেয়ে রাইমা মারা যায়।

এ সময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাদিকুল (৮) মারা যায়। পরে মধ্যে গুরুতর আহতবস্থায় রোকেয়া আক্তার (৫২) ও মুক্তি আক্তারসহ ৪ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করে। ঢাকা নেওয়ার পথে রোকেয়া আক্তার (৫২) ও মুক্তি আক্তার মারা যায়।

এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলোকে সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করে।

দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের আহত যাত্রী আব্দুর রশিদ বলেন, সিলেট মাজার জিয়ারত শেষে জাফলং বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আশুলিয়া ফেরার ফথে একটি ট্রাক আমাদের মাইক্রোবাসের উপর উঠিয়ে দেয়। এরপর দেখি আমার স্ত্রী ও মেয়েসহ পরিবারের সদস্যরা রাস্তার উপর পড়ে আছে।

প্রত্যক্ষদশী নান্নু মিয়া বলেন, মাইক্রোবাসটি আসছিল। মুহুর্তের মধ্যেই বিকট শব্দ। মাইক্রোবাসটি ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। রাস্তার উপর মহিলা ও শিশুরা পড়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। এবং একটা পিকআপ থামিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠাই।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এলামুল হক সাগর বলেন, দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৫ জন মারা গেছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে।

Scroll to Top