প্রাণিখাদ্য তৈরিতে ব্যবহার করতে হবে আয়োডিনযুক্ত লবণ

আজ সোমবার (১৪ জুন) সংসদে প্রাণিখাদ্য তৈরিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করার বিধান রেখে ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। আইন অমান্য হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

আজ শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিলটি পাসের সুপারিশ করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত, যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করা হয়।

এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

১৯৮৯ সালের ‘আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন’ রহিত করে নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছিল।

বিলে মানুষের জন্য ভোজ্য লবণ এবং প্রাণিখাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহৃত লবণে আয়োডিন না থাকলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে খুচরা লবণ বিক্রেতা এই অপরাধে দণ্ডিত হবেন না।

বিলে বলা হয়েছে, লবণ আমদানি, উৎপাদন, গুদামজাত, ভোক্তা পর্যায়ে পাইকারি সরবরাহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ পরিশোধন করতে চাইলে এই আইনের অধীন নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন না করলে দুই বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। প্যাকেট বা লেবেলবিহীন ভোজ্য বা অভোজ্য লবণ বিক্রি করলে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, একটি জাতীয় লবণ কমিটি থাকবে। এই কমিটি লবণের উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিশোধন, আয়োডিনযুক্তকরণ, মজুদ, বিক্রয়, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, লবণ কারখানার জন্য আয়োডিন সরবরাহ, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনা নীতির বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। ১৪ সদস্যের জাতীয় লবণ কমিটিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব সভাপতি ও বিসিক চেয়ারম্যান সদস্য সচিব হবেন। এ কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে আয়োডিনযুক্ত লবণ পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন সেল কার্যক্রমগুলো নজরদারি করবে।

এতে বলা হয়, জাতীয় মানমাত্রা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদনে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ থেকে ৫০ পিপিএম এবং খুচরা পর্যায়ে ২০ থেকে ৫০ পিপিএম মাত্রার আয়োডিন থাকতে হবে। সরকার জাতীয় লবণ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী লবণ পরিশোধানাগার আয়োডিনযুক্তকারী কারখানার জন্য আয়োডিনের সরবরাহ নিশ্চিত করবে। বিসিক লবণের উৎপাদন বাড়ানো এবং উৎপাদনে বিজ্ঞাপন ভিত্তিক কৌশল প্রয়োগ নিরাপদ উৎপাদন পরিশোধন ও অন্যান্য বিষয়ে লবণ উৎপাদনকারী ও পরিশোধনকারীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করবে। সরকার প্রয়োজনে লবণ গবেষণা ইনস্টিটিউট করতে পারবে। লবণ প্রক্রিয়াজাতকরণে শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হবে বলে বিলে বলা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে ভোজ্য লবণে আয়োডিনযুক্তকরণ এবং মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিখাদ্য তৈরিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশের আয়োডিনযুক্ত লবণ খাতের সার্বিক ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বিদ্যমান আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন-১৯৮৯ রহিতক্রমে প্রয়োজনীয় সংশোধনপূর্বক যুগোপযোগী করে লবণ বিল-২০২১ বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়।

Scroll to Top