বৈশ্বিক মহামারি করোনার তাণ্ডবে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ ও ক্লাস শুরু করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (৩০ মে) সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সব শিক্ষার্থীর জন্য করোনা ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, শপিংমল ও গণপরিবহনসহ সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললেও অদৃশ্য কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ১ জুনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল ও ক্যাম্পাস খুলে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ ও ক্লাস শুরু না করা হলে আগামী মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতীকী কফিন নিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করার ঘোষণা দেন তারা।
অনলাইন ক্লাস নজীরবিহীন বৈষম্য উল্লেখ্য করে ঢাবির একাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, ‘সরকার একটি সিম কার্ড দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মোবাইল ডিভাইস দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছে। অনলাইন ক্লাসের নামে শিক্ষার্থীদের সাথে যে বৈষম্য করা হয়েছে সেটা বিশ্বে নজীরবিহিন।’ তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে রিভিউ ক্লাস নিয়ে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজকে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সব প্রাইমারি স্কুল বন্ধ আছে। তাদের প্রতি ক্ষমতাসীনদের যে নিষ্ঠুর আচরণ, সেটা বাংলাদেশের সংবিধানে যে বৈষম্যের নীতি আছে সেটার সাথে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ। সরকারের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য তারা তৈরি আছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মূসা মো. আরিফ বিল্লাহ বলেন, পৃথিবীতে এমন কোন বিশ্ববিদ্যালয় পাবেন না, যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে চায় কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা নিতে চায় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী সকাল-বিকাল দুপুরে এক এক সময় এক এক কথা বলেন যে, এত তারিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। কিন্তু ঐদিন আসলেই তিনি একটা শর্ত জুড়ে দেন। এভাবে কোন দেশ চলতে পারে না।
এদিকে, ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও উপাচার্য বিরোধী নানা স্লোগান দেয়। পরে আগামী মঙ্গলবার তাদের পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তারা আজকের মতো তাদের আন্দোলন স্থগিত করেন।