এবারো প্রকৃত বড় ক্ষতির হাত থেকে রেহাই দিতে চলেছে বাংলাদেশকে। এরইমধ্যে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানা শুরু করলেও দেশের উপকূলে কেবল প্রভাব পড়ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের, যদিও এতেই সাগর বিক্ষুব্ধ।
আজ বুধবার (২৬ মে) আবহাওয়া অফিস জানায়, ইয়াসের প্রভা বে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং ১০০ কিমি বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে থাকবে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত।
ইয়াসের প্রভাবে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষণ-পশ্চিমাঞ্চলে এরইমধ্যে অনেক বাঁধ ভেঙে গেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে লবণাক্ত পানি। ভোগান্তিতে পড়েছে লাখো মানুষ।
আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিমি পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিমি পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৫৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুপুরে উড়িশার ডামরার উত্তর এবং বালাশশারের দক্ষিণ দিক দিয়ে ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিমি পর্যন্ত বাড়ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ইয়াস উপকূল অতিক্রমকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বাড়ায় দেশের সকল নদীবন্দরেই দেওয়া হয়েছো হুঁশিয়ারি সংকেত। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নৌযান চলাচল।