এবার এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলেই জেল-জরিমানা

এডিস এক প্রকার মশা। যেটি ডেঙ্গু ও পীতজ্বরের মতো মারাত্মক দুটি রোগের বাহক। এই থেকে নিরাপদে থাকতে হলে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নির্মাণাধীন ভবন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের পানি, ছাদে জমা বৃষ্টির পানি, ট্যাঙ্ক থেকে নির্গত পানি, যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য, ডাস্টবিনে জমে থাকা পানি, ডাবের খোসা, ফুলের টবে জমা পানি, ভবনের পাশের পরিত্যক্ত জায়গা এডিস মশার বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এডিস মশার জীবাণুবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর ইতোমধ্যেই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

ঢাকা শহরজুড়েই এখনো রয়েছে মশার প্রজননস্থল। এমন বাড়ি চিহ্নিত করে শতর্ক করা হয়েছে। ৩ দিন পর পর এসব জায়গার পানি ফেলে পরিষ্কার করতে হবে। অন্যাথায় এসব বাসা বাড়ির মালিকদের জেল ও জরিমানা করা হবে।

এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ শনিবার (২৯ মে) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে একযোগে ডেঙ্গু নিধনে অভিযান শুরু হবে। ডেঙ্গু মশার লার্ভা রয়েছে এমন বাসা বাড়িতে নোটিশ দেওয়ার এক সপ্তাহ পর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। যদি লার্ভা পুনরায় পাওয়া যায়। তবে সিটি কর্পোরেশন আইন, পরিবেশ আইন ও সরকারের নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে ১ থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়া সর্বোচ্চ ছয় মাস থেকে এক বছরের জেল দেওয়া হবে।

শনিবার (২২ মে) নগরীর পল্লবীতে এডিস মশা নিধনে জনসচেতনতা সৃষ্টি বিষয়ক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আজকে সতর্ক করে গেলাম। ঠিক এক সপ্তাহ পরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। যার বাসা-বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে পানি জমা রাখলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাসায় স্বচ্ছ পানি জমা থাকলে এডিস মশা জন্মে। একজন মশার বিস্তার করছেন অন্যজন কামড় খাচ্ছেন এটা পরিষ্কার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাসায় জমা থাকা স্বচ্ছ পানি পাওয়া গেলে জবাবদিহিতা করা হবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, এডিস মশা প্রতিহত করা যায়। সবাইকে সম্পৃক্ত করেই এই মশা ধ্বংস করতে হবে। কারোর একার পক্ষে মশা নিধন করা সম্ভব নয়। এডিশ মশা জমা থাকা পানিতে জন্মে তাই সবাইকে জমা থাকা পানি তিন দিন পর একদিন পরিষ্কার করতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এখন বৃষ্টি ও প্রচণ্ড গরম পড়ছে এটাই এডিস মশা বিস্তারের উপযুক্ত সময়। সামগ্রিকভাবে এডিস মশা ধ্বংস করতে হবে। ৩ দিনে একদিন জমে থাকা পানি ফেলে দিন। এটা সবার মাথায় ঢোকাতে হবে যে এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মে।

মেয়র আরও বলেন, ৭ দিন পর ডেঙ্গু অভিযান শুরু হবে। কারোর বাড়িতে এই মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জেল ও জরিমানা করা হবে।

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ঢাকা শহরকে সুন্দর রাখা উচিত। এই বিষয়ে সবার সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। পরিবেশ সুন্দর রাখতে হবে আমার দেশ, আমার শহরকে পরিষ্কার রাখতে হবে। এডিস মশা নিধনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুধু মন্ত্রী-মেয়রের পক্ষে এডিস মশা নিধন করা সম্ভব নয়। সামগ্রিকভাবে এই মশা ধ্বংস করতে হবে। আমাদের চারপাশ পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা রাখলে এই মশা নির্মূল করা সম্ভব।

এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সংশ্লিষ্টরা।

Scroll to Top