পরমাণু সমঝোতা নিয়ে রুহানি ও বরিস জনসনের মধ্যে যে কথা হল টেলিফোনে

পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমেরিকা যদি ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার কূটনৈতিক সমাধান চায় তবে তাকে অবিলম্বে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “যদি আমরা কূটনৈতিক সমাধান চাই তাহলে রাস্তা পরিষ্কার। আমেরিকাকে পরমাণু সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে এবং এর বিকল্প কিছু নেই।”
হাসান রুহানি বলেন, নয়া মার্কিন প্রশাসন পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসা এবং নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বাস্তবে তার পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্যদেশ ও জার্মানিকে নিয়ে গঠিত ছয় জাতিগোষ্ঠী ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা সই করে। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই সমঝোতা থেকে তার দেশকে বেআইনিভাবে বের করে নিয়ে তেহরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

সম্প্রতি জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। অবশ্য তিনি একথাও বলেছেন, এই সমঝোতায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করতে চান। কিন্তু তেহরান পরমাণু কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনও বিষয়কে এই সমঝোতার অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতা করার পাশাপাশি আগে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট রুহানি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনালাপে আরও বলেন, আমেরিকা একতরফাভাবে এবং কারও সঙ্গে আলোচনা না করে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। কাজেই তাকে আগে এই সমঝোতায় ফিরে নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে এবং এজন্য কারো সঙ্গে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই।

ওদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টেলিফোনালাপে জনসন দাবি করেছেন, তার দেশ পরমাণু সমঝোতায় অটল রয়েছে। তিনি আমেরিকার পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে ইরানকে তার প্রতিশ্রুতিতে পুরোপুরি ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তেহরান এর আগে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পরপরই ইরান তার প্রতিশ্রুতিতে পুরোপুরি ফিরে যাবে।

Scroll to Top