রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও ২০৪.২৫ হেক্টর বনভুমিকে ৩১ মে ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ঘোষণা করে। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম একটি। এই বনকে বাংলাদেশ সরকারের বনবিভাগের অধীনে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
চিরসবুজ এই বন গোয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত (গোয়াইন নদী সারি গোয়াইন নদীর সাথে মিলিত হয়েছে) এবং চেঙ্গির খালের সাথে একে সংযুক্ত করেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Millettia pinnata)। বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বাকি সারা বছর, পানির উচ্চতা ১০ ফুটের মতো থাকে। বর্ষাকালে এই বনে অথৈ জল থাকে চার মাস। তারপর ছোট ছোট খালগুলো হয়ে যায় পায়ে-চলা পথ। আর তখন পানির আশ্রয় হয় বন বিভাগের খোঁড়া বিলগুলোতে। সেখানেই আশ্রয় নেয় জলজ প্রাণীকুল।
দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল এলাকায় প্রবেশ, ভিডিও ধারণ ও নৌকা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারকে ফি দিতে হবে। সিলেট বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন রাতারগুলে প্রবেশের ফি নির্ধারণ করে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
সেখানে বলা হয়েছে, রাতারগুল বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশ ফি ৫০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্ক (১২ বছরের নিচে) ও পরিচয়পত্র ধারী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রবেশ ফি ২৫ টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ ফি ৫০০ টাকা। প্রতিদিনের ফিল্মমিং ফি (প্রতি ক্যামেরা) ১০ হাজার টাকা।
দেশি দর্শনার্থীদের প্রতিবার নৌকা (ইঞ্জিনবিহীন) ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা দিতে হবে। আর বিদেশিদের দিতে হবে এক হাজার টাকা। এছাড়া বাস বা ট্রাকের প্রতিবারের পার্কিং ফি ২০০ টাকা। পিকআপ/জিপ/কার/মাইক্রোবাস পার্কিং ফি ১০০ টাকা এবং সিএনজি/মোটরসাইকেল পার্কিং ফি ২৫ টাকা দিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর এ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে রাতারগুলে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সীমিত ছিল। গতকাল রবিবার (১ নভেম্বর) থেকে তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।