পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় এক কথিত পীরের আস্তানায় এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের অভিযোগে ইসাহাক আলী (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার (৩১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ওই যুবক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত ইসাহাক আলী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের সিভিল হাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়াঘাট (ব্ল্যাকপাড়া) এলাকার জয়নাল মোল্লার বাড়িতে প্রায় ৫ বছর পূর্বে নুর নবী মওলাপুরী দরবার শরীফ নামে একটি মাজার প্রতিষ্ঠা করেন জয়নাল মোল্লার জামাতা কথিত পীর হাফিজুল ইসলাম। সেখানে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার সারা রাতব্যাপী গান বাজনার আসর বসতো।
সেই মাজারের ভক্ত হিসেবেই পাকশী ইউনিয়নের সিভিল হাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে ইসাহক আলী যাতায়াত করতেন। মাজারে যাতায়াতের এক পর্যায়ে কথিত পীর হাফিজুল ইসলামের শ্যালিকা স্বামী পরিত্যক্তা খালেদা খাতুন কুটিলার (২৬) সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় ইসাহকের। গত শুক্রবার গভীর রাতে আসর চলাকালে আস্তানার পাশের একটি কক্ষে ইসাহক ও কুটিলাকে একসঙ্গে দেখে ফেলেন কুটিলার ভাই রবিউল মোল্লা।
এসময় সে চিৎকার করলে বড় ভাই বাবু মোল্লাও সেখানে উপস্থিত হন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই ভাই বাবু মোল্লা ও রবিউল মোল্লা লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে ইসাহকের মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে তার নাক ও কান দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ইসাহক আলীকে ঘরেই বন্দি করে রাখেন তারা। শনিবার ভোর রাতে ইসাহক আলীর অবস্থার অবনতি হলে মাইক্রোবাসে করে গোপনে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১০টার দিকে ইসাহাক আলীর মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী আরো জানায়, ইসাহাক ও কুটিলা দুই জনই বিবাহিত। ইসহাকের স্ত্রী ও পাঁচ বছরের একটি সন্তান রয়েছে আর কুটিলারও চার বছরের একটি সন্তান রয়েছে। কুটিলার স্বামী প্রায় ৫/৬ বছর আগে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন। তারপর থেকে কুটিলা কখনও বাবার বাড়ি কখনও ভগ্নিপতি পীর হাফিজুলের বাড়িতে সময় কাটান।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাসীর উদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি সত্য। তবে এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।