নবম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ করে স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার বিচারে নবীউল ইসলাম নামে এক পুলিশ সদস্য দোষী সাবস্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরে। ঐ পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দিনাজপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শরীফ উদ্দিন আহম্মেদ গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় আসামির উপস্থিতিতে তাকে দোষী সাবস্ত করে এই রায় ঘোষণা করেন। আসামিকে রায় ঘোষণার পর দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
দিনাজপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তৈয়বা বেগম জানান, গত ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় ভুক্তভোগী নবম শ্রেণির ছাত্রীর নানী সদর উপজেলা শেখপুরা গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী আমেনা বেগম বাদী হয়ে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল দিনাজপুর সদর উপজেলার মাতা সাগর মহল্লার জাফর আলীর ছেলে নবীউল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলার দায়ের করেন।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২০১৩ সালের ২০ এপ্রিল সকাল ১০টায় এজাহারকারী আমেনা বেগমের নাতনী দিনাজপুর শহরে মহারাজা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তার বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তখন আসামি পুলিশ সদস্য নবীউল ইসলাম (৩৮) শহরের মহারাজা স্কুলের পাশ্বে বটতলী নাম স্থানে ভিকটিমকে মাইক্রোবাস যোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ভিকটিমকে বিয়ের কথা বলে আসামি নবীউল ইসলাম তাকে ঢাকা গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ধর্ষণ করে।
ঘটনার এক পর্যায়ে গত ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর বিকেলে দিনাজপুরের পাবর্তীপুর উপজেলায় স্থানীয় জনগণের হাতে আসামি নবীউল ইসলাম অপহৃতা ঐ নবম শ্রেণির ছাত্রীসহ আটক হয়। এরপর পুলিশ তাকে প্রথমে পাবর্তীপুর জিআরপি থানা এবং পরে কোতয়ালী থানায় সোপর্দ করে। এই ঘটনায় ভিকটিমের নানী আমেনা বেগম বাদী হয়ে গত ২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর কোতয়ালী থানায় পুলিশ কনস্টেবল নবীউল ইসলামকে আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি বিচারামলে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে বিচারক আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেন।