দেশে যৌন হয়রানি ও যৌন নির্যাতনের মত জঘন্য ঘটনা হঠাৎ বেড়ে গেছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় সোহাগ ও নুর হোসেন রাসেল নামে দেলোয়ারের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার সোহাগ বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের পোড়া মুনসির ছেলে। আর রাসেল একই এলাকার সোলেমানের ছেলে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
এ নিয়ে ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এদের পাঁচজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের পৃথক রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ভুক্তভোগী গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। স্থানীয় দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার রহিম, বাদল, কালামসহ অন্য সহযোগীদের নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে যান। সেখানে তাঁরা স্বামীসহ ওই গৃহবধূ অনৈতিক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ এনে নির্যাতন চালান। গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন তাঁরা। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূ নিজের সম্ভ্রম রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন; কিন্তু নির্যাতনকারী কয়েকজন যুবক তাঁর পোশাক কেড়ে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু বলতে থাকে। এ সময় তিনি হামলাকারীদের \’বাবা\’ ডাকেন এবং তাদের পায়ে ধরেন। কিন্তু এক যুবক কয়েকবার তাঁর মুখমণ্ডলে লাথি মারেন এবং পা দিয়ে মুখসহ শরীর মাড়িয়ে দেন। তাঁর শরীরে একটা লাঠি দিয়ে আঘাতও করতে থাকেন। তাঁর নগ্ন ছবি ধারণের চেষ্টা চালান তাঁরা। একজন হাত উঁচিয়ে তাঁকে উৎসাহ দেন। আরেকজন তাঁর শরীরের অবশিষ্ট পোশাক টেনে নেন। এ সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবেন বলে চিৎকার করেন একজন।
ঘটনাটি নজরে এলে গত রবিবার (৪ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতেই থানায় পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।