ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যাকাণ্ডে দুই গৃহকর্মী রুমা ওরফে রেশমা ও রিক্তা আক্তার ওরফে স্বপ্নার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন আদালত। আজ রবিবার (০৪ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভুইয়া।
রায় ঘোষণার পূর্বে দুই গৃহপরিচারিকা রুমা ওরফে রেশমা ও রিক্তা আক্তার ওরফে স্বপ্নাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
এছাড়াও, হত্যা করার পর মালামাল চুরির দায়ে দুই আসামিকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস সশ্রম কারাভোগ করতে হবে তাদের। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা। আসামিপক্ষের আইনজীবী মতিউর রহমান রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। মিথ্যা ও অন্যায় ভাবে তাদের চার্জশিটভুক্ত করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি, তারা সম্পূন্নভাবে নির্দোষ। এই রায়ে আমরা ক্ষুদ্ধ। ন্যায় বিচার পাইনি আমরা। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করছি, উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পাবো এবং আসামিরা খালাস পাবে।’
চলতি বছর ৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। মামলাটিতে গত বছর ২১ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই আলমগীর হোসেন মজুমদার ঢাকা সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল গত ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর শেষ করেন। চার্জশিটের আসামিরা বাসায় থাকা ২০ ভরি স্বর্ণ, একটি স্যামসাং মোবাইল এবং নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা চুরি করতে অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে নাক মুখে ওড়না পেঁচিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন বলে চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন। ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১৩ নম্বর থেকে রেশমা গ্রেফতার হয়।
উল্লেখ্য, গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি এলিফেন্ট রোডের নিজ বাসায় খুন হন মাহফুজা চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের স্বামী ইসমত কাদির গামা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়, চলতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারি আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে একা পেয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে।
পরে ২০ ভরি স্বর্ণ (মূল্য ১০ লাখ টাকা) , একটা মোবাইল ফোনসহ নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
