মধ্য প্রাচ্যের আরব দেশগুলো উদীয়মান শক্তি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের অধিক মনোযোগী। এখন সম্পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপ হিসেবে পালিয়ে আসা অভিবাসী প্রত্যাশী উইঘুরদের গ্রেপ্তার করে চীনে ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে। অবশ্য এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে আরব দেশগুলো এবং চীন।
জানা গেছে, বেইজিংয়ের সঙ্গে মিলে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো অনেক উইঘুর শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের হয়রানি করছে। এক উইঘুর নারীর অভিযোগ, নিজের স্বামীকে পাঁচ বছর ধরে দেখছেন না তিনি। সৌদি আরবে হজ পালনের সময় তাকে গ্রেপ্তার করে তাকে চীনে ফেরত পাঠানো হয়।
বর্তমানে তুরস্কে অবস্থান করা ওই নারী বলেছেন, আমাদের সন্তানেরা পিতৃহীন হয়ে পড়েছেন। আমরা নিজ থেকেই এখানে চলে এসেছি। চীন সরকার ২০১৪ সাল থেকে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জিনজিয়াং প্রদেশে স্বাধীনতাকামী উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়নমূলক অভিযান চালিয়ে আসছে। কিরগিজস্তান, কাজাখস্তান ও মঙ্গোলিয়া সীমান্তঘেঁষা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটি ১৯৪৯ সাল থেকে চীনের নিয়ন্ত্রণে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ১ কোটি উইঘুর মুসলমানের বসবাস। সেখানে তাদের আধিপত্য টেনে ধরতে চীন সরকার আদিবাসী চাইনিজ হান জাতিগোষ্ঠীর বসতি বাড়াচ্ছে। ফলে দিন দিন সংখ্যালঘুতে পরিণত হচ্ছে উইঘুররা।
অনেকের দাবি, অন্তত ১০ লাখ উইঘুরকে চীনের বিভিন্ন বন্দিশালায় আটক করে রাখা হয়েছে। তাদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অনেক অধিকার সংস্থার দাবি। এমন অবস্থায় অনেক উইঘুর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এখন এসব আরব দেশেও তাদের স্বস্তি মিলছে না।
মধ্য প্রাচ্যের উইঘুরদের নিয়ে কাজ করা উইঘুর অধিকারকর্মী আব্দওয়েলি আয়ুপ বিবিসিকে বলেছেন, তিনি এমন পাঁচজন উইঘুরের খবর পেয়েছেন তাদের সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ তাদের চীনে ফেরত পাঠিয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন বলে জানান আয়ুপ।
এদিকে, চীনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে মিসর সম্প্রতি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অন্তত ১২ জন উইঘুর শিক্ষার্থীদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে এবং কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও এ ধরনের খবর পাওয়া গেছে।
: বিবিসি