চীন-ভারত উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। লাদাখে সীমান্ত সঙ্ঘাতের জেরে জম্মু-কাশ্মীর নিয়েও ভারতকে ব্যস্ত রাখতে চাইছে চীন। গোয়েন্দা রিপোর্ট উল্লেখ করে ভারতের একটি সরকারি সূত্র এমনটা জানিয়েছে। গোয়েন্দারা বলছেন, বেইজিংয়ের মদতেই ভূস্বর্গে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ ঢোকানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ইসলামাবাদকে অস্ত্রশস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়েও সাহায্য করছে চীন। কিন্তু ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারির ধরা পড়ছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা।
বার বার ধাক্কা খেয়ে এবার কৌশল বদলাচ্ছে পাকিস্তান। কাশ্মীরে সংঘাত চালু রাখতে পাকিস্তানকে সরাসরি মদত দিচ্ছে চীন। সম্প্রতি উপত্যকা থেকে একাধিক বার প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। আর সেই অস্ত্র সম্ভারের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে চীনা আগ্নেয়াস্ত্র এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম। সরকারি সূত্র বলছে, উপত্যকায় আক্ষরিক অর্থেই বারুদের স্তূপ গড়তে চায় পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সূত্র মারফত এটাও জানা গিয়েছে, এই উদ্দেশ্যপূরণে পাকিস্তানকে ক্রমাগত মদত দিয়ে চলেছে চীন।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিজ্ঞতা বলছে, উপত্যকায় অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য সাধারণত গরমের সময়টাই বেছে নেওয়া হয়ে থাকে। কারণ শীত পড়তে শুরু করলে সীমান্তে থাকা বিস্তৃত ঝোপঝাড় শিশির বা বরফে চাপা পড়ে যেতে থাকবে। ফলে ওই রাস্তা ব্যবহার করে লুকিয়ে সীমান্ত পার হওয়া সম্ভব হবে না। কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ এবং অস্ত্র পাচার বন্ধ করতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। তার জেরে ‘কার্যসিদ্ধি’তে বারেবারেই ধাক্কা খাচ্ছে পাকিস্তান।
এদিকে এ বার দ্বিতীয় পরিকল্পনা নিয়ে আসরে নেমেছে পাকিস্তান। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ‘নিরস্ত্র’ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে পাকিস্তান। আর তাদের অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে ড্রোন মারফত বা অন্য কোনও ভাবে। অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য নজর রাখা হচ্ছে ভারতীয় বাহিনীর উপর।
একই সঙ্গে কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি-দলে টেনে আনার চেষ্টাও গত দু’মাসে বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বলে ওই সরকারি সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে কোনও রকম ‘ঝুঁকি’ ছাড়াই অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে ড্রোন বা কোয়াড কপ্টারের মাধ্যমে। ‘নিরাপদ’ পথে কাশ্মীরে অস্ত্র পাঠাতে চীনা ড্রোন এবং কোয়াড কপ্টার ব্যবহার করছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সেই সঙ্গে রয়েছে চীনা অস্ত্রশস্ত্রও।
কাশ্মীর থেকে একাধিক বার ইএমইআই টাইপ ৯৭ এনএসআর রাইফেল উদ্ধার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওই রাইফেল তৈরি করে চীনা সংস্থা নরিনকো এবং তা চীনের সেনা ব্যবহারও করে। গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই রাইফেলই ‘উপহার’ হিসাবে ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিচ্ছে বেইজিং।