গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রত্যেক জেলায় বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, আইসিইউয়ের চেয়েও বার্ন ইউনিট গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় সবাইকে ঢাকামুখী হতে হয়। এতে পথেই অনেক রোগী মারা যায়।
তিনি বলেন, একটা হাসপাতালে মরফিন থাকবে না; যেটার দাম ৩৫ টাকা। চিকিৎসকদের ব্যাসিক ট্রেনিং থাকবে না, এটা হয় না। আজকে রাস্তায় যে কোন সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে, এক্সিডেন্ট হলে আগুন লাগতে পারে। এজন্য প্রত্যেকটা ডাক্তারের বার্নের চিকিৎসা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
আজ রবিবার বেলা ১১টায় তিনি নারায়ণগঞ্জের তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণে আহত রোগীদের দেখতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন ও বার্ন ইউনিটের ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. আবদুল কালামের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
জাফরুল্লাহ বলেন, প্রত্যেক জেলায় দগ্ধ বা দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের ব্যবস্থা করতে হবে, নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকা মসজিদে বিস্ফোরণে আহত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারলে অনেকেই বেঁচে যেতো।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্যবস্থাপনার একটা ভুল আছে। আমি যেটা দেখেছি, আমি সন্তুষ্ট। চিকিৎসকরা অনেক যত্ন নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু একটা দুর্ভাগ্য হলো এটা বাংলাদেশের একমাত্র হাসপাতাল, কিন্তু এখানে আসার আগেই ৫০ পার্সেন্ট চিকিৎসা যেখান থেকে আসছে সেখানে পাওয়া দরকার ছিল। আমার বয়স যখন অনেক কম ছিল, যখন আমি বিলেতে প্র্যাকটিস করতাম।
আমাদের কাজ ছিল; বার্ন রোগী যারা আসতো, সঙ্গে সঙ্গে একটা মরফিন ইনজেকশন দিয়ে দেয়া। কিন্তু এখানে যেটা হয়, তাকে ডাক্তার সাহেব লিখে দেন নিয়ে আসেন। ওষুধটার (মরফিন) দাম ৩৫ টাকা, এটা ৩০০/৩৫০ তে পাওয়া যায়। এটার দাম ৩৫ টাকাও হওয়া উচিত না। এটার দাম ৩৫০ টাকা হওয়া উচিত না, ইনফ্যাক্ট গণস্বাস্থ্য এটা বানায়। যেহেতু সবাই দাম বাড়িয়েছে গণস্বাস্থ্য দাম বাড়িয়েছে। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। সরকারে ওষুধ নীতিতে এসবের দাম নির্ধারণ করা থাকলে এই একটা ইনজেকশনের দাম হতো ২০-২৫ টাকা।
২০-২৫ টাকা হওয়ার মানেই হলো গণস্বাস্থ্যের ৫ থেকে ১০ টাকা প্রফিট হওয়া। সেটা না করে এটা এখন ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তারপর আরেকটা ড্র ব্যাক আমি লক্ষ্য করলাম উনাদের লাইসেন্স অনেক কম। একটা ৫০০ বেডের হাসপাতালে মিনিমাম ৩০ হাজার ইনজেকশনের পারমিশন থাকা উচিত। কারণ আসার সাথে সাথে ইনজেকশনটা দিতে হয়। মরফিনে আবার হার্ট টাকে বাঁচায়। নারায়ণগঞ্জেই রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া উচিত ছিল।
রোগীদের চিকিৎসাটা যদি নারায়ণগঞ্জেই করা যেতো তাহলে হয়তো অনেক রোগী বেঁচে যেতে পারতো। এই রোগীদের খুবই দ্রুত চিকিৎসা করার ব্যবস্থা দরকার ছিল। চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, আমি সামন্তলালকে বললাম তোমরা কয়জনকে ঢাকায় আনবা। প্রত্যেক জেলা শহরে এমন রোগীদের জন্য চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।