কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজনের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম জসিম উদ্দিন এ আদেশ দেন। ক্রোক সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
আনিসুল হক ছাড়া বাকি যাঁদের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।
গত বছরের ১ নভেম্বর রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রথম আলোর মাসিক সাময়িকী কিশোর আলোর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান চলাকালে ওই মাঠেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় আবরার। ওই ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ৬ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন আবরার রাহাতের বাবা মজিবুর রহমান। মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কিশোর আলোর প্রকাশক মতিউর রহমানসহ অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত আবরারের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে বাদীর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক আবদুল লতিফ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের দায়িত্বে অবহেলায় আবরারের মৃত্যু হয়েছে। কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও প্যান্ডেলে যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল তা ছিল ১২০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর পরিচালিত। তদন্তের সময় সেখানে সংযোগ দেওয়া বৈদ্যুতিক তার জব্দ করা হয়। বিভিন্ন তার বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা করা হয়। দেখা গেছে, অনুষ্ঠানস্থলের বিদ্যুতের তারের সংযোগ লাইন সঠিক ছিল না। তারের বিভিন্ন স্থান জোড়াতালি দেওয়া ছিল। কোনো কোনো স্থানে স্কচটেপ লাগোনো ছিল। বিভিন্ন স্থানে তারের ইনসুলেশন খোলা ছিল। মোট কথা বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল অরিক্ষত।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আবরার রাহাত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আগে আরো কয়েকজন ওই সব তারে জড়িয়ে পড়ে। তারা অভিযোগ করার পরও বিদ্যুৎ লাইন ঠিক না করে অনুষ্ঠান চালিয়ে নেয় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ। আবরার রাহাত বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক জেনেও অনুষ্ঠান চালিয়ে যান আয়োজকরা। তার যথাযথ চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি।