এবার উত্তেজনা বিরাজ করছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে । এরইমধ্যে কান্দাহারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আর্টিলারি হামলায় ১৫ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮০ জন। ঘটনাটি গত ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবারের। তবে এখনও এর জেরে তীব্র উত্তেজনা চলছে দুই দেশের মধ্যে। ঘটনাটির জেরে তখনই নিজেদের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে সজাগ থাকতে বলেছিল কাবুল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, এমনিতে দুই দেশের মধ্যে চমন-স্পিন বোলদাক সীমান্ত বন্ধই থাকে। কিন্তু ইদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এই সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বন্ধ সীমান্তের দুইপাশের পাকিস্তানি ও আফগানরা সীমান্ত পার হয়ে এই উৎসবে পরিবারবর্গের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। সেইসময় দু’পক্ষের বাহিনীর মধ্যে সামান্য সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এরপর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আফগানস্তানের মাটিতে গোলাবর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এদিনই এর কড়া বিবৃতি দিয়েছিল। বলেছিল, পাক সেনাবাহিনী আফগান ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালানো বন্ধ না করলে আফগান সেনাবাহিনীও তার প্রতিশোধ নেবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনও এই সংঘর্ষ নিয়ে সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তাতে সুদৃঢ় ও সদর্থক সমাধান বের হবে বলে আশা করছেন তারা।
জানা গেছে, একেবারে স্পিন বোলডা-এর আবাসিক এলাকাতেই হামলা চালায় পাক সেনা। এতে প্রথমে নয়জন নিহত এবং বিপুল আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। পরে ২৪ ঘণ্টার তথ্যে ১৫ জন নিহত এবং আরও ৮০ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়। আবার হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন।
এর আগে কোভিড-১৯ মাহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সীমান্তের দুই দিকে দুই দেশেরই সাধারণ মানুষ জড়ো হয়েছিল। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে একসময় আফগান পক্ষের জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে পাকিস্তানি কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিল।
সেই সময়ই একদফা ঝামেলা হয়েছিল দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে। এরপরই আচমকা পাকিস্তানের দিক থেকে ছু়টে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে গোলা। এর রেশ কাটেনি এখনও। তীব্র উত্তেজনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তি হলেও দুই দেশের মধ্যে মোটেই বনিবনা নেই। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই আফগানিস্তান অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তান সরকার ও সামরিক বাহিনী গোপনে তালেবান জঙ্গিদের সমর্থন করে।
তবে পাকিস্তান বারবারই তা অস্বীকার করেছে। এবং উল্টো আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পাক সরকারবিরোধী জঙ্গিদের সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ করেছে কাবুল।