মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এখন একটি রাজনৈতিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একধরনের মোহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির তথ্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই প্রবৃদ্ধির ব্যাখ্যা করলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত বিদায়ী অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব নিয়ে আজ রোববার (১৬ আগস্ট) ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেছে সিপিডি। সেখানে ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রবৃদ্ধির হিসাব অতিরঞ্জিত করে লাভ নেই। এটা নীতিনির্ধারণে সহায়তা করবে না। তিনি মনে করেন, তথ্য–উপাত্ত সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান বিবিএসের স্বাধীনতা দিন দিন খর্ব করা হচ্ছে। ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিবিএসের দেওয়া জিডিপির প্রাক্কলন করোনার প্রভাব তেমনভাবে প্রতিফলিত হয়নি।
গত সপ্তাহে বিবিএস বলেছে, গত অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধির এই হিসাব বাস্তবতার সঙ্গে মিলছে না। বিবিএস বলছে, করোনার মধ্যেও ব্যক্তি বিনিয়োগ গতবারের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে, যা নীতিনির্ধারকদের ভুল বার্তা দিচ্ছে। এত বিনিয়োগ হলে তো ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা রাখার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ার দরকার হতো না।
সেবা খাত সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘বিবিএসের তথ্য–উপাত্ত দেখে মনে হচ্ছে, করোনার মধ্যে সেবা খাতের পতন ঘটেনি। কিন্তু আমরা জানি, কত মানুষ কর্মহীন হয়েছে। তাদের জন্য সরকারও নানা ধরনের সহায়তা কর্মসূচি নিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির মূল্যায়ন তুলে ধরেন সংস্থার গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। সেখানে বলা হয়েছে, অর্ধেকের বেশি জিডিপি প্রাক্কলন করার মতো গ্রহণযোগ্য তথ্য–উপাত্ত নেই। বিবিএসের দেওয়া জিডিপির হিসাব বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। একটি পরিসংখ্যান কমিশন তৈরি করার সুপারিশ করেছে সিপিডি।