চাঞ্চল্যকর ফাহিম হত্যার শুনানি আগামী সোমবার

ফাউদ্যমী-মেধাবী এবং স্বপ্নবাজ, টেক জায়ান্ট ফাহিম সালেহ (৩৩)’র চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া টাইরেস হ্যাসপিল (২১)কে ১৭ আগস্ট সোমবার ম্যানহাটান ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করার কথা। সশরীরে সম্ভব না হলে ভার্চুয়ালে তার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানাবেন আদালত।

উল্লেখ্য, তথ্য-প্রযুক্তি জগতে তরুণ বয়সেই ব্যাপক খ্যাতি অর্জনকারি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ফাহিম সালেহকে গত ১৩ জুলাই দুপুরে ম্যানহাটানে নিজ এপার্টমেন্টে হত্যা করা হয়। পরদিন অপরাহ্নে ফাহিমের লাশ করাত দিয়ে কয়েক টুকরা করার পর পলিথিনের ব্যাগে ভরা হয়েছিল। ময়নাতদন্তকারীরা আদালতকে অবহিত করেছেন, ফাহিমের ঘাড়ে, গলায় বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাত ছাড়াও বাম হাতে জখম ছিল।

তদন্ত কর্মকর্তারা বিলাসবহুল ওই এপার্টমেন্ট ভবনের সিসিটিভি ফুটেজের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ফাহিমের বিশেষ সহকারি টাইরেস হ্যাসপিল ১৩ জুলাই ফাহিমের সাথে কথা বলতে বলতে সপ্তম তলায় এপার্টমেন্টের ভেতরে পর্যন্ত ঢুকেই ফাহিমকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এরপর ফাহিমের ক্রেডিট কার্ডে করাতসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করা হয় ফাহিমের লাশ গুম করার মতলবে। এ কাজে ম্যানহাটানে লোয়ার ইস্ট সাইডে হিউস্টন স্টিটে অবস্থিত ওইএপার্টমেন্ট ভবন থেকে স্টোরে যাতায়াতের জন্যে ব্যবহৃত ট্যাক্সির ভাড়াও পরিশোধ করা হয় ফাহিমের ক্রেডিট কার্ডেই। এভাবেই হ্যাসপিলের হদিস উদঘাটন করতে সক্ষম হয় নিউইয়র্কের পুলিশ।

১৭ জুলাই হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করা হয় এপার্টমেন্টটির সন্নিকটে এয়ারবিএনবির বাসা থেকে। সেই বাসার ভাড়াও পরিশোধ করা হয় ফাহিমের ক্রেডিট কার্ডে। উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে এই সুযোগ পেয়েছিল হ্যাসপিল। গ্রেফতারের পর আদালতে ভার্চুয়ালে হ্যাসপিলকে উপস্থাপনের পর জামিনহীন আটকাদেশ দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সে সময় হ্যাসপিল নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

হ্যাসপিলের আইনজীবীরা প্রচ্ছন্নভাবে হুমকি দিয়ে বলেছেন, এটি জটিল একটি মামলা। এজন্যে অনেক কঠিন পথ পেরুতে হবে। তাই প্রাথমিক দৃষ্টিতেই হ্যাসপিলকে দোষী ভাবা সমীচীন হবে না।

এদিকে, হ্যাসপিলের গার্লফ্রেন্ড ম্যারিন (২২) বলেছেন, পুলিশ যে অভিযোগ উত্থাপন করেছে, তা আমি বিশ্বাস করতে চাই না। কারণ, আমি তাকে খুব ভালো করেই জানি।

ইউরোপ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় নিউইয়র্কে এসেছেন ম্যারিন। দু’বছর যাবত হ্যাসপিলের সাথেই থাকতেন। হ্যাসপিলকে গ্রেফতারের পর তিনি নিজ দেশে ফিরে গেছেন। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তারা তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তবে তাকে ওই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে পুলিশ মনে করেনি।

এদিকে, দুদিন আগে ফাহিমের বড় বোন রুবি এঞ্জেলা বলেছেন, আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। সকলের দোয়া চাই যেন ফাহিমের আত্মা শান্তিতে থাকে।

Scroll to Top