প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী, রাজ্যসভার সাংসদ ও সিনিয়র সিপিআইএম (ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি) নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। করোনায় আক্রান্ত ছিলেন শ্রমিক সংগঠনের এই নেতা।
আজ দুপুরের দিকে পরপর দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয় তার। প্রথমবার সামলে নিলেও দ্বিতীয়বার মৃত্যুর কাছে হার মানেন তিনি।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই বাধ্যর্কজনিত অসুখ ও প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন শ্যামল চক্রবর্তী। এরপর গত ৩০ জুলাই ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। সম্প্রতি তার শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ মেলে। এরপরই তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকায় গত ১ আগস্ট তাকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তর করা হয়।
করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
বাবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর জানিয়ে নিজের ফোসবুক পেজে প্রথম পোস্ট করেন তার কন্যা টালিগঞ্জের অভিনেত্রী ঊষসী চক্রবর্তী। ইই.এম.বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার খবরও জানান ঊষসী। বাবার খবর জানতে চেয়ে তার সাথে ফোন করে ঊষসীকে সবরকম সহায়তার আশ্বাস দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
১৯৪৩ সালে জন্ম শ্যামল চক্রবর্তীর রাজনীতিতে প্রবেশ ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ১৯৮২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভায় পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দুই বারের মেয়াদে রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন শ্যামল চক্রবর্তী।
তার মৃত্যুতে এক শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘রাজ্যের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী সিপিআই (এম) নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে আমি গভর শোক প্রকাশ করছি। শ্যামলবাবু শ্রমিক সংগঠন সেন্টার অব ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নসের (সিআইটিইউ) রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তার মৃতুতে রাজনৈতিক জগতের ক্ষতি হলো। আমি শ্যামল চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’