নেত্রকোণায় জমি বেচে চলত \’প্রতিবন্ধী পরিবার\’, তারা এখন নিঃস্ব

নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলায় একই পরিবারের পাঁচ জন প্রতিবন্দী থাকায় দিনদিন পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ছে। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের শিবাশ্রম গ্রামের চান মিয়ার পরিবারের সদস্যরা হলেন, ভাই বাক প্রতিবন্দী মোহম্মদ নূর মিয়া, মোহাম্মদ হাশেম, মো. কাশেম, ভাতিজা রাব্বি মিয়া ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে মো. রিফাত।

এদের তিনজনের বয়স পঞ্চাশোর্ধ ও দুজনের বয়স কিছুটা কম। পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে কোনভাবে দিনাতিপাত করলেও বর্তমানে তারা ভূমিহীন হয়ে খুবই কষ্টে আছেন।

বর্ষা মৌসুমে হাওরে মাছ শিকার ও শুকনো মৌসুমে অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে এবং লোকজনের আর্থিক সহয়তায় চলে তাদের সংসার। টানা পোড়নের সংসারে করোনাভাইরাসের কারণে তাদের সংসারের সংকট আরো বেড়ে গেছে। নিজের জমি না থাকায় নিম্নাঞ্চলে কৃষি জমিতে বসত ঘর তোলে বসবাস করছিলেন তারা। সম্প্রতি বন্যা দেখা দেয়ায় বসত ঘরে পানি প্রবেশ করে গৃহহীন হয়ে পড়েছে পরিবারটি।

পরিবারের অভিভাবক চান মিয়া জানান, আমাদের প্রতিবন্দী সন্তান জন্ম হওয়ায় তাদের লালন পালন করতে আমাদের সহায় সম্পদ যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। মানুষের সহায়তায় সংসার চললেও বর্তমানে করোনাভাইরাস ও বন্যায় আমাদের জীবন লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। বর্তমানে আমরা অনাহারে অর্ধাহারে অন্যের বাড়িতে জীবন যাপন করছি। এ পর্যন্ত আমরা কোন সরকারি সহায্য পাইনি। শুনেছি বর্তমানে আমার ছেলে রিফাতের নামে একটি প্রতিবন্দী ভাতার কার্ড মঞ্জুর হয়েছে। এতে আমাদের দুঃখ দূর হবে না। সরকারি সাহায্যের মাধ্যমে একটি খামার করে দিলে আমাদের জীবনের পরিবর্তন ঘটত।

ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়াত উল্লাহ রয়েল জানান, এ পরিবারের নিকট থেকে রিফাত নামের একজনের আবেদন পেয়ে ভাতার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। শুনেছি এ পরিবারে আরো চারজন প্রতিবন্দী আছে। আবেদন করলে তাদের ভাতার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিক আহমেদ জানান, আমার বিষয়টি জানা ছিল না। তবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ভাতা ভোগীদের নামের তালিকা দিয়ে থাকে। যদি বাদ পড়ে থাকে আমরা তাদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করব।

Scroll to Top