২৬ বছর বয়সী শারমিন আক্তার। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে। ৮ বছর আগে একই উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের সুজাত আলী সুজনের সাথে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। দাম্পত্য জীবন সুখেই চলতে থাকে শারমিন-সুজনের।
দীর্ঘ আট বছরের বিবাহিত জীবনে তাদের কোন সন্তান ছিলনা।
তিন বছর আগে শারমিনের উপর কুনজর পরে সুজনের দুঃসম্পর্কের চাচাতো ভাই একই গ্রামের মহর আলী বেপারীর ছেলে মিঠুর (২০)। এক পর্যায় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তা দৈহিক সম্পর্কে রূপ নেয়। শারমিনকে বিয়ের আশ্বাসে নিয়মিত চলতে থাকে মিঠু-শারমিনের অসামজিক কার্যকলাপ। মাস ছয়েক আগে বিয়ের উদ্দ্যেশে ঘর ছাড়ে শারমিন ও মিঠু।
ঢাকার উত্তরার এক আত্মীয়ের বাসায় ১৫ দিন অবস্থান করার পর বিয়ে না করেই শারমিনকে ফেরৎ পাঠায় মিঠু। শারমিন চলে যায় স্বামী সুজনের বাড়িতে। মেনে নেয় সহজ সরল স্বামী সুজন। একই ঘটনা ঘটে রমজানের কয়েকদিন আগে। এবারও বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারমিনকে স্বামীর ঘর থেকে বের করে মিঠু। এবার তারা গিয়ে উঠে নারায়নগঞ্জের এক আত্মীয়ের বাসায়।
সেখানে তিন দিন অবস্থান করার পর বিয়ে না করে পুনরায় স্বামীর কাছে ফেরৎ পাঠায় মিঠু। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চললেও মেনে নেন স্বামী সুজন। বার বার শারমীনকে ধোঁকা দিতে থাকে মিঠু। আবারো মিঠুর সুন্দর কথায় বিয়ের ফাঁদে পা দেয় শারমিন। সবশেষ ১৯ই সেপ্টেম্বর বিয়ের আশায় মিঠুর হাত ধরে বাড়ি ছাড়ে শারমিন।
স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে সাভারের হেমায়েতপুরে বাসা ভাড়া করে শারমিন ও মিঠু। এরই মধ্যে হেমায়েতপুর কাজী অফিসে গিয়ে শারমিনকে দিয়ে স্বামী সুজনকে দিয়ে তালাক দেয়ায় মিঠু। আর এ কাজে মিঠুকে সহযোগীতা করে রহমানের ছেলে রাশেদ। বিয়ে ছাড়াই চলতে থাকে শারমিন ও মিঠুর দাম্পত্য জীবন। মোবাইলের পুরাতন সকল সীম কার্ড বন্ধ করে নতুন সীম ব্যবহার করতে থাকে তারা।
যাতে কেউ তাদের খোঁজ না পায়। কিন্তু তাদের এ গোপনীয়তা বেশিদিন টেকেনি। ১৩ দিন পর শারমিনের বড় ভাই লাল মিয়া হেমায়েতপুর ভাড়া বাসা থেকে শারমিনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কৌশলে পালিয়ে যায় মিঠু। বর্তমানে শারমিন তার বাবার বাড়ি কয়েড়া গ্রামেই অবস্থান করছে। আর মিঠু এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শারমিন জানান, তিন বছর ধরে মিঠুর সাথে আমার সম্পর্ক। মিঠুর দেয়া বিয়ের আশ্বাসে এর আগেও আমি দুই বার ঘর ছেড়েছি। এবার সে আমাকে বিয়ে করবে বলে সাভার হেমায়েতপুরে বাসা ভাড়া করে।
ওই এলাকার কাজী অফিসে আমাকে নিয়ে গিয়ে আমার স্বামী সুজনকে ডিভোর্স দেয়ায়। আমাকে পরে বিয়ে করবে বলে জানিয়ে দেয়। আমি সরল মনে তাই মেনে নেই। ভাড়া বাসায় আমরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে অবস্থান করি। পরে খবর পেয়ে আমার ভাই আমাকে নিয়ে আসে। এখন মিঠু বলছে আমাকে বিয়ে করবেনা। আমি এখন কোথায় যাবো। আমি মিঠুর এ প্রতারণার জন্য আইনের আশ্রয় নিবো। শারমিনের বাবা আব্দুস সালাম জানান, মিঠু আমার মেয়েকে বিয়ের আশ্বাসে ফুঁসলিয়ে অনেক বড় সর্বনাশ করেছে।
এখন আমার মেয়ের কি হবে। আমি মিঠুর উপযুক্ত বিচার চাই। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মিঠু জানায়, আমি এখন কি করবো? যেহেতু আমার পরিবারের লোকজন ঘটনা জেনে গেছে তারা যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি তাই করবো। আমি পরিবারের বাইরে কিছু বলতে পারবোনা। মিঠুর বাবা মহর আলী বেপারী জানান, যেহেতু ছেলে একটা অন্যায় করেই ফেলছে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে দেখি কি করা যায়।
এ ব্যাপারে গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এর আগেও মিঠু শারমিনকে নিয়ে দুই বার পালিয়েছিলো। যা এলাকার সবাই জানে। তখন শারমিন স্বামী সুজনকে তালাক দেয়নি। কিন্তু এবার মিঠু শারমিনকে দিয়ে সুজনকে তালাক দিয়েছে। এটা অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। মিঠুর চরম বিচার হওয়া উচিত। সূত্রঃ মানবজমিন
বাংলাদেশ সময় : ১৬৫০ ঘণ্টা, ০৯ অক্টোবর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ