ঘরে বসেই জাতীয় পরিচয়পত্র পেলেন ১০ লাখ নাগরিক

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অনলাইন সেবায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এতে ঘরে বসে কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হাতে পেয়েছেন ১০ লাখ নাগরিক।

ইসির এনআইডি শাখা জানিয়েছে, গত ২৬ এপ্রিল অনলাইনে নিজের এনআইডি নিজেই ডাউনলোড করার সেবা উদ্বোধন করে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে ১০৫ নম্বরে এসএমএস পাঠানাের মাধ্যমে নিজ এনআইডি নম্বরও জানা যাচ্ছে। আবার ইন্টারনেট লিংকে (https://services.nidw.gov.bd) লগইনের মাধ্যমে নিজ এনআইডি নম্বর জানা ছাড়াও অনলাইন কপি পাচ্ছেন নাগরিকরা। এই এনআইডি দেখতে হুবহু লেমিনেটিং করা এনআইডির মতো। এটি ডাউনলোডের পর প্রিন্ট করে কেবল লেমিনেটিং নিজে থেকে করে নিলেই হয়।

গত ২ মার্চ হালনাগাদ ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার নতুন ভােটার। মূলত, তাদের কথা মাথায় রেখেই সেবাটি চালু করে নির্বাচন কমিশন।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, একটি দুয়ার বন্ধ হলে আরেকটি দুয়ার যেমন খুলে যায়, তেমনি করোনার কারণে এনআইডি সার্ভিসের ভার্চ্যুয়াল দুয়ারও খুলে গেছে। এতে ইসির নিজের যেমন লাভ হয়েছে, তেমনি নাগরিকদেরও ভোগান্তি কমেছে।

ইসির এনআইডি অনুবিভাগের কমিউনিকেশন শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান জানিয়েছেন, অনলাইন সেবায় ব্যবহৃত কার্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়ার-সিএমএস ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাইনলোড করেছেন ৯ লাখ ৮০ হাজার নতুন ভোটার।

ইসির ওয়েবসাইট (https://services.nidw.gov.bd) ভিজিট বা ব্যবহার করেছেন ১২ লাখ ১১ হাজার জন নাগরিক। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন ১১ হাজার নাগরিক। এছাড়া এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেছেন ৪ হাজার ৩০০ ভোটার। আর হারানো এনআইডি কার্ড পুনঃউত্তলন করেছেন ৭৫০ জন।

ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম জানান, এ প্রক্রিয়ায় আমাদের ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া সময়ও বেঁচে যাচ্ছে। সেবাগ্রহীতাদেরও সময় এবং অর্থের অপচয় কমছে।

তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সেবার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আর সে ভাবনা থেকেই নাগরিকের দোরগোড়ায় কেবল নয়, হাতের মুঠোয় সেবা পৌঁছে দিয়েছি।

ঘরে বসেই নিজের এনআইডি নিজেই ডাউনলোড করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ভোটাররা।

এম পাভেল হাসান নামে একজন তার ফেসবুকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে লিখেছেন, একটা বড় ঝামেলা থাকা সত্ত্বেও আজ ৬দিন পর সংশোধন হলো এনআইডি। এবং ডাউনলোডও করলাম। ধন্যবাদ ইসি, সুন্দর একটা ব্যবস্থা করার জন্য।

অনেকে সেবা না পাওয়ার কথাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরছেন। তবে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, যারা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলছেন, তারা হয়তো সঠিকভাবে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন না। ১০ লাখ ভোটার নিজেই নিজের এনআইডি ডাউনলোড করেছেন। অন্যদের না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি ভোটারের তথ্য আছে। এদের প্রথমে এনআইডি সরবরাহ করে পরবর্তী স্মার্টকার্ড দিচ্ছে ইসি। যারা এখন লেমিনেটিং করা কার্ড নিচ্ছেন বা নিজে এনআইডি নিজেই ডাউনলোড করে নিচ্ছেন, তারাও পরবর্তীতে স্মার্টকার্ড পাবেন। বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি ইসিকে স্মার্টকার্ড তৈরিতে সহায়তা করছে।

অনলাইন সেবা আরো গতিশীল করতে সারাদেশে সব উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের বর্তমানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রশিক্ষণ শেষে এ সেবা আরো তরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি।

Scroll to Top