প্রাণঘাতী করোনা দুর্যোগে টানা ১ মাস ১১ দিন বন্ধ থাকার পর ঈশ্বরদী জংশন থেকে বিভিন্ন রুটে তিনটি যাত্রীবাহী আন্তঃনগর ট্রেন দেশের বিভিন্ন রুটে অতিক্রম করেছে। তবে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ট্রেনে চড়ছেন না।
বুধবার (৩ জুন) দ্বিতীয় ধাপে আংশিক ট্রেন চলাচল শুরুর প্রথম দিনে বেলা ১১:২০ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী ৭১৫ নম্বর রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঈশ্বরদী জংশনে প্রবেশ করে। ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে প্রবেশের পর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৪০টি নির্ধারিত আসনের মধ্যে ২০ যাত্রী নিয়ে পঞ্চগড়ের দিকে ছেড়ে যায়।
এর আগে প্রথম ধাপে এক মাস ৮ দিন পর সোমবার (১ জুন) ৭৬৩ নং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি খুলনা-ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে চলাচল করে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) ফুয়াদ হোসেন আনন্দ জানান, দ্বিতীয়ধাপের প্রথম দিনে বুধবার (৩ জুন) সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে হয়ে গোয়ালন্দঘাটগামী ৭৫৬ নম্বর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে প্রবেশ করে। এই ট্রেনে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী ২৫ আসন বরাদ্দ থাকে এই স্টেশনের যাত্রীদের জন্য। করোনা পরিস্থিতির কারণে বরাদ্দকৃত ১২ সিট বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৭ জন যাত্রী নিয়ে সকাল সাড়ে ন\’টায় গোয়ালন্দঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঈশ্বরদী জংশন হয়ে রাজশাহীগামী ৭১৫ নম্বর আন্তঃনগর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ১০টা ৩৫ মিনিটে ঈশ্বরদী জংশনে প্রবেশ করে। পূর্বের ১২৮ আসনের নির্ধারিত অর্ধেক ৬৭ আসনের যাত্রী নিয়েই সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী অভিমুখে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
ডিসিও আরও জানান, প্রথম ধাপের একটি ট্রেন সোমবার (১ জুন) চালু হওয়া ৭৬৩ নং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকালে খুলনা থেকে এসে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ঈশ্বরদী জংশনে প্রবেশ করে। ৩৫ টি আসনের ১৬টি আসন বরাদ্দ ছিল। ১৬ জন ট্রেনযাত্রী নিয়েই ঢাকার দিকে গেছে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি বন্ধ। অনলাইনের মাধ্যমেই টিকিট সংগ্রহ করে ভ্রমণপ্রিয় ট্রেনের যাত্রীরা ট্রেনে চড়ছেন। আবার সাধারণ কিছু মানুষ যারা অনলাইনে টিকিট কাটতে পারে না টিকিট নিয়ে স্টেশনে না নিয়ে আসার কারণে তাদের ট্রেনে উঠতে দেওয়া হয়নি। তবে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ট্রেনে চলাচল করছে না।
বুধবার (৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় দপ্তরের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আসাদুল হকের নেতৃত্বে বিভাগীয় রেলওয়ে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, রেলওয়ে জিআরপি পুলিশ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের কর্মচারীরা ট্রেন আসা এবং ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত পরিদর্শন করে বিভিন্ন কার্যকম পরিচালনা করেন।
এসময় ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের যাত্রীদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ট্রেনে ওঠানো হয়। এর আগে ট্রেনগুলো স্টেশনে প্রবেশের পরই রেলওয়ে কর্মচারীরা ট্রেনের সব কয়টি কামড়ার দরজা জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে পরিস্কার করেন। ট্রেনে ভ্রমণরত কতিপয় রেলওয়ে কর্মচারীদের চলাফেরা-কাজকর্মে কিছুটা অনিয়ম দেখেই তাদেরকে হুঁশিয়ার করা হয় এবং যথাযথভাবেই তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য মেনে চলতে বলা হয়। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলকারী সকল ট্রেনযাত্রীকে রজনীগন্ধা ফুলের স্টিক দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।