করোনা: হবিগঞ্জে বিনামূল্যে মিলছে ১০ টাকা কেজির চাল

প্রাণঘাতী করোনার থাবায় বাংলাদেশেও বাড়ছে আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা। চলছে লকডাউন। যার প্রভাবে হিমশিম খাচ্ছে অস্বচ্ছল মানুষ। তাদের জন্য সরকার চালু করেছে বিশেষভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রির (এএমএস) ব্যবস্থা। তবে এ সময়ে ১০ টাকা কেজি দরে চাল গ্রহণের সামর্থও নেই অনেকের। অপারগ অসংখ্য কর্মহীন শ্রমজীবী।

এ অবস্থায় হবিগঞ্জ জেলা শহরে গ্রহণ করা হয়েছে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। বিশেষ ওএমএস কার্ডধারী সাড়ে ৯ হাজার মানুষকে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল।

রোববার (৩ মে) দুপুরে জেলা শহরের ৫টি পয়েন্টে বিশেষ কার্ডধারীদের পক্ষে ডিলারের হাতে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চালের টাকা তুলে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি। এই সহায়তা চলবে পুরো রমজান মাস জুড়ে।

জানা গেছে, হবিগঞ্জ পৌরসভায় ৯ হাজার ৬০০ জন বিশেষ ওএমএস কার্ডধারী রয়েছেন। যারা এক মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ২ মেয়াদে পাচ্ছেন ২০ কেজি চাল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মহীন থাকায় এই অল্প টাকাও নেই অনেকের হাতে। জানতে পেরে তাদের পাশে দাঁড়িছেন এই জনপ্রতিনিধি।

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, রোববার ২ হাজার বিশেষ ওএমএস কার্ডধারীর পক্ষে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২ লাখ টাকা ডিলারদের দিয়েছেন এমপি আবু জাহির। আগামী মঙ্গলবার আরো ২ হাজার লোকের টাকা পরিশোধ করবেন তিনি। পরবর্তীকালে জেলা আওয়ামী লীগ এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের মাধ্যমে দেওয়া হবে বাকি সুবিধাভোগীদের টাকা।

চাল নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, তার স্বামী থাকলেও অসুস্থ অবস্থায় ঘরে। রিকশাচালক ছেলেটিও বেকার। ১০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতেও তাদের সামর্থ ছিল না। এই সুবিধা পেয়ে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।

অটোরিকশাচালক এনামুল হাসান বলেন, অনেকেই সহায়তা দেবেন বলে আশ্বস্ত করলেও দেননি। অবশেষে একটি ওএমএস কার্ড পেলেও ঘরে টাকা ছিল না। এখন বিনামূল্যে চাল পেয়ে স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের ভাতের ব্যবস্থা হয়েছে।

এ ব্যাপারে এমপি আবু জাহির বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জ পৌরসভায় বিশেষ ওএমএস কার্ডধারী ২ হাজার অস্বচ্ছল লোকের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ২ লাখ টাকা ডিলারদের দিয়েছি। ফলে আজ ২ হাজার মানুষ বিনামূল্যে পেলেন ১০ কেজি করে চাল। আগামী মঙ্গলবার একইভাবে আরো ২ হাজার মানুষের জন্য পুনরায় ২ লাখ টাকা পরিশোধ করবো। আগামী বৃহস্পতিবারও অন্য ২ হাজার মানুষ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে এই সুবিধা পাবে। পবিত্র রমজান উপলক্ষে আমার ব্যক্তিগত এবং জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

টাকা হস্তান্তরের সময় হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মিজানুর রহমান, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. শাহ আলম, জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, আওয়ামী লীগ নেতা নূর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Scroll to Top