বরিশালে জনসমাগম করে মদ বিক্রি, ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি

বরিশালে অবৈধভাবে মদ বিক্রি এবং সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ১ দিন পরেই অতিরিক্ত পরিচালক এএএম হাফিজুর রহমানসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে।

রোববার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও এই বদলি সংক্রান্ত পৃথক দুটি অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে। যেখানে বদলিকৃত ২৬ জনকেই ২৬ এপ্রিলের মধ্যে স্ব স্ব কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ২৭ এপ্রিল থেকে বর্তমান কর্মস্থল হতে তাৎক্ষনিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মামুন কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক এএএম হাফিজুর রহমানকে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলির বিষয়টি বলা হয়েছে। পাশাপাশি সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডুকে বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া অপর এক অফিস আদেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বদলি করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এরমধ্যে পরিদর্শক পদে ৩ জন, উপ-পরিদর্শক পদে ৪ জন, সহকারি উপ-পরিদর্শক পদে ৫ জন, সিপাহী পদে ৬ জন, হিসাবরক্ষক পদে ১ জন, গাড়িচালক পদে ২ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ১ জন, ওয়্যারলেস অপারেটর ১ জন, অফিস সহায়ক পদে ১ জন করে রয়েছেন।

এছাড়া বরিশাল জেলা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো. মেহেদী হাসনকে ঢাকাস্থ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে প্রশাসন অধিশাখায় সংযুক্ত করা হয়েছে।

পাশাপাশি পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. এনায়েত হোসেনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করার জন্য ইতিপূর্বে যে আদেশ দেয়া হয়েছিল তাও বাতিল করা হয়েছে ওই আদেশে।

এছাড়াও রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের একজন পরিদর্শক, পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের দুই জন ও বরগুনা জেলা কার্যালয়ের একজন উপ-পরিদর্শক, ভোলা ও নারায়নগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের একজন করে গাড়িচালক, পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের একজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, ও একজন অফিস সহায়ককে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য গতকাল শনিবার লকডাউন উপেক্ষা এবং জনসমাগম করে অবৈধভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ ওঠে বরিশাল মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্লিস্টদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন অবৈধভাবে মদ বিক্রির ছবি তুলতে যান। এ সময় সেখানকার উপস্থিত কর্মচারীরা ওই ক্যামেরাপারসনকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। খবর পেয়ে চলমান ভ্রাম্যমান আদালত র‍্যাবের সহায়তায় সেখানে উপস্থিত হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ বদলির আদেশ জারি করে কেন্দ্রীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

Scroll to Top