বগুড়ায় শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু, শোক সইতে না পেরে মায়ের আত্মহত্যা

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মায়ের সঙ্গে ঘুমন্ত এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে সন্তান হারানোর শোক দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শোক গুলোর মধ্যে একটি। সন্তান হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে ওই শিশুর মা বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার ভোরে উপজেলার পোতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্বজন ও প্রতিবেশীদের ধারণা, শাশুড়ির সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে সন্তানকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছেন।

তবে পুলিশ বলছে, মায়ের শরীরের নিচে চাপা পড়ে শিশুটি শ্বাসরোধে মারা গেছে। এ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মাও আত্মহত্যা করেন।

নিহতরা হলেন- নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের পোতা গ্রামের বিপ্লব বর্মণের স্ত্রী লিপি রানী বর্মণ (২৫) ও তার ছেলে বাপ্পী বর্মণ।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, ৫ বছর আগে লিপি রানীর বিয়ে হয় বিপ্লব বর্মণের। তাদের ঘর আলো করে আসে দুই বছর ১০ মাস বয়সী সন্তান বাপ্পী বর্মণ। বিপ্লব দুপচাঁচিয়া উপজেলার একটি চালকলে শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি সেখানে থাকেন ও মাঝে মাঝে স্ত্রী সন্তানের খোঁজ নিতে বাড়ি আসেন।

করোনাভাইরাসের কারণে যানবাহন না থাকায় তিনি নিয়মিত বাড়িতে আসতে পারতেন না। স্ত্রী সন্তান ছাড়াও বাড়িতে বিপ্লবের বাবা, মা বসবাস করেন।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে লিপির চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের ঘুম ভেঙে যায়।

সবাই ঘরে এলে লিপি জানান, বাপ্পী মারা গেছে, তার বেঁচে থেকে লাভ নেই। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা মৃত শিশু বাপ্পীকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে লিপি আড়ালে গিয়ে বিষপান করে আর্তনাদ করতে থাকেন। তখন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে বুধবার ভোর ৪টার দিকে লিপি রানী বর্মণ মারা যান।

লিপির ভাই আনন্দ বর্মণ অভিযোগ করেন, তার বোনকে শাশুড়ি পছন্দ করতেন না। তাকে মানসিক নির্যাতন করা হতো। এ কারণেই লিপি ছেলেকে হত্যা করে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

নন্দীগ্রাম থানার ওসি শওকত কবির জানান, স্বজন ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ সঠিক নয়। ওই পরিবারে কোনো কলহ ছিল না।

ঘুমন্ত শিশু বাপ্পী মায়ের শরীরের নিচে চাপা পড়ে শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছে। আর এ শোকে মা বিষপানে আত্মহত্যা করেন। এর পরও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

মা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Scroll to Top