গ্রাহক পর্যায়ে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম গড়ে ১ টাকা ০৭ পয়সা (১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)। তবে এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি বলেছে, নেসকোর ইউনিটপ্রতি ঘাটতি ৮৯ পয়সা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর টিসিবি মিলনায়তনে বিদ্যুতের দাম পুনর্মূল্যায়ন-বিষয়ক গণশুনানিতে এই প্রস্তাব দেন নেসকোর কর্মকর্তারা। গণশুনানি সঞ্চালনা করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির চার সদস্য। নেসকোর পক্ষে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকিউল ইসলাম ও চার কর্মকর্তা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সম্পদ ও দায়দেনা নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে কাজ শুরু করে নেসকো। এ কোম্পানি এবারই প্রথম দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে বিইআরসির কাছে এসেছে। নেসকোর আওতায় রয়েছে রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের ১৬টি জেলা।
গতকাল শুনানির শুরুতে নেসকোর প্রস্তাব তুলে ধরেন সংস্থাটির এমডি জাকিউল ইসলাম। লিখিত প্রস্তাবে তিনি বলেন, পাইকারি ক্রয়মূল্য অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে বেশি, পূর্ববর্তী খুচরা ট্যারিফ ঘাটতি বিবেচনায় নেসকো খুচরা ট্যারিফ ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। একই সঙ্গে ডিমান্ড চার্জ ও সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
নেসকোর প্রস্তাবে বলা হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিট সরবরাহ ব্যয় ইউনিটপ্রতি ৭ দশমিক ৩৮ টাকা। বিদ্যমান খুচরা ট্যারিফ ইউনিটপ্রতি ৬ দশমিক ৩১ টাকা। ফলে ইউনিটপ্রতি ঘাটতি ১ দশমিক ০৭ টাকা।বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রির কারণে গত অর্থবছরে নেসকোর লোকসান হয়েছে। নেসকো বর্তমান বিদ্যুতের পাইকারি দরের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব করেছে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, নবগঠিত নেসকো ৫ দশমিক ১২ টাকায় পিডিবি থেকে পাইকারি বিদ্যুৎ কিনছে। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ (আরইবি) ৪ দশমিক ২৩ টাকায় এবং ওজোপাডিকো ৪ দশমিক ৬৪ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনছে। ফলে পাইকারি ক্রয়মূল্যে আরইবির সঙ্গে ৮৯ পয়সা এবং ওজোপাডিকোর সঙ্গে ৪৮ পয়সা ঘাটতি রয়েছে। তাই পাইকারি পর্যায়েও দাম বিবেচনা করা প্রয়োজন। নেসকোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম।
বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে গণশুনানি শুরু হয়েছে। এবার পিডিবি বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে পাইকারি বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আর বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানি গ্রাহক পর্যায়ে ৬ থেকে ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এই গণশুনানি শেষ হচ্ছে। শুনানির পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বিইআরসি বিদ্যুতের মূল্য পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, ০৫ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ