বড় অগ্রগতি হচ্ছে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে। এক বছরের ব্যবধানে মোট ও নিট উভয় হিসাবেই এফডিআই বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ৪৯৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। নিট হিসাবে এর পরিমাণ ৩৮৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। এর আগে কোনো একক বছরে এত বেশি এফডিআই আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তবে একটি একক কোম্পানি বিনিয়োগের কারণেই এফডিআই বেড়েছে।
গত অর্থবছরে দেশের আকিজ গ্রুপের মালিকানায় থাকা ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডকে (ইউডিটিসি) কিনে নিয়েছে জাপানি তামাক কোম্পানি জাপান টোব্যাকো (জেটি) গ্রুপ। এই অধিগ্রহণের মাধ্যমে জেটি এদেশে প্রায় ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে। যা গত অর্থবছরে আসা মোট এফডিআইয়ের ৭০ শতাংশ।
ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত এক দশক ধরেই রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এফডিআই আকর্ষণে বড়ো ভূমিকা পালন করে। এছাড়া সরকারের ধারাবাহিকতাও এফডিআই আকর্ষণে ভূমিকা রাখছে। এর বাইরে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, সহজে ব্যবসা করার (ডুয়িং বিজনেস) সূচকে উন্নয়নের জন্য সরকারের উদ্যোগ এক্ষেত্রে বড়ো ভূমিকা রাখছে। এফডিআইয়ে বড়ো অগ্রগতি বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূলত জাপান টোব্যাকোর বিনিয়োগের কারণেই গত বছর এফডিআই বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে আর এধরনের বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে এবছর এফডিআই কমতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, বড়ো এফডিআই আকর্ষণের জন্য সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিদেশিদের এদেশে বিনিয়োগ করা কিংবা যাদের বিনিয়োগ আছে তাদের বিনিয়োগ ধরে রাখার জন্য দূর্নীতি ও চাঁদাবাজি দূর করতে হবে। একইসঙ্গে যেসব আইন আছে তার বাস্তবায়নও করতে হবে। এফডিআই-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সর্বমোট এফডিআই আসে ৪৯৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এর মধ্যে বিদেশি কোম্পানিগুলো মূলধন প্রত্যাবাসন, বিনিয়োগ তুলে নেওয়া, মূল কোম্পানি ও আন্তঃকোম্পানি ঋণ দেওয়া বাবদ ২১ শতাংশের বেশি অর্থ ফেরত নিয়ে গেছে।