অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন যে, জেলে না পাঠিয়ে খেলাপি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে। আর এ জন্যই তিনি এককালীন ২ শতাংশ নগদ টাকার (ডাউনপেমেন্ট) বিনিময়ে খেলাপিদের বিশেষ ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দিয়েছেন।
সচিবালয়ে বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা ঋণের ২ শতাংশ দেবেন, তারা আবার ব্যবসা করতে পারবেন। কারণ, তাদের ব্যবসা করতে হলে আবার ঋণের প্রয়োজন হবে। আর যারা ভালো তাদের বাড়তি কোনো ঋণ লাগবে না। আমরা যে কাজটি করতে চাচ্ছি, সেটা হচ্ছে কাউকে জেলে না পাঠিয়ে টাকা আদায়। যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছেন তাদের সবাইকে টাকা ফেরত দিতে হবে। যেভাবেই হোক এ টাকা আদায় করবই। এগুলো রাষ্ট্রের সব মানুষের টাকা। আমরা শুধু সময়টা একটু বাড়িয়ে দিয়েছি।
ব্যাংক খাতকে দাঁড় করানোই উদ্দেশ্য-এ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশের বেশি হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারের পাশাপাশি বাজেটেও তার উল্লেখ রয়েছে। তবে এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যাংক, ঋণগ্রহীতা, সরকার ও দেশের মানুষ যেন না ঠকে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, চক্রবৃদ্ধি সুদের হারের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানবে না, এমন ব্যাংকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। আইন ভঙ্গ করলে প্রয়োজনে একীভূত করা হবে, এ ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসা হচ্ছে আইনে। সরকারের সিদ্ধান্ত মানবে না, এটা হতেই পারে না।
অর্থমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত বছরেই ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার কথা বলেছিল। এ জন্য তারা সরকারের কাছে যেসব শর্ত দিয়েছিল, সরকার সেগুলো পূরণ করেছে। কেউ কেউ এক অঙ্কে সুদের হার নামিয়েছেও। তবে অনেকেই নামায়নি।
পুঁজিবাজার, ব্যাংক, অ-ব্যাংক, রাজস্ব, শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রেই সংস্কার আনার তাগিদ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি সংস্কার না আনি তাহলে পিছিয়ে থাকব। অন্য দেশ এ সব কাজ ২৫ বছর আগেই করেছে। আমরা কোনো কিছুতেই হাত দিতে পারিনি।’
ব্যাংক কমিশন করার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক কমিশন যে করা হবে তা বাজেট বক্তব্যেই বলা হয়েছে। শিগগিরই ব্যাংক কমিশন করা হবে। তবে তা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায়।