ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার নামাজে জানাযায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে এশার নামাজের পর নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ ঢাকায় পৌঁছনোর কথা রয়েছে। অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে সাদেক হোসেন খোকাকে।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে নামাজে জানাযার আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকাকে স্যালুট জানান সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতারা। তারা জাতীয় পতাকা দিয়ে মরদেহ ঢেকে দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারী বকুল, সহ-সভাপতি আবুল বাশার চুন্নু ও কার্যকরি সদস্য লাবলু আনসার।
সাদেক হোসেন খোকার নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগম। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি শামীম হোসেন। তিনি বক্তব্য শুরু করার পর মসজিদে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা চিৎকার শুরু করেন। খোকার পাসপোর্ট নবায়ন না করার প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি হট্টগোলে রূপ নিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আব্দুস সালাম, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।
এসময় ইশরাক হোসেন বলেন, নিউইয়র্ক কনস্যুলেট পাসপোর্ট নবায়ন না করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বাবার মরদেহ দেশে নিয়ে যাবার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে। তিনি দলের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা আমার বাবার জন্য যা করেছেন আমার পরিবার তা মনে রাখবে। সাদেক হোসেন খোকার ছোট ছেলে ইশফাক হোসেনও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও দলমত নির্বিশেষে অসংখ্য প্রবাসী সাদেক হোসেন খোকার জানাযায় অংশ নেন। মসজিদের প্রতিটি ফ্লোর কানায় কানায় ভরে যায়। মসজিদের আশেপাশের সড়কেও তার জানাযায় অংশ নেন শত শত মানুষ।
সোমবার দুপুরে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন নেসা ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, সাদেক হোসেন খোকার বড়ো ছেলে ইশরাক হোসেন কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ফিউনারেল হোমের কাগজপত্র পাওয়া মাত্রই কনস্যুলেট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। কনসাল জেনারেল জানান, সাদেক হোসেন খোকার স্ত্রী ইসমত আরার জন্য ট্রাভেল পাস চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। এর আগে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করা হলেও তা এখনো প্রক্রিয়াধীন বলে জানান কনসাল জেনারেল।
স্থানীয় সময় রবিবার দিবাগত রাত ২টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিট) নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের বিশেষায়িত হাসপাতাল মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে ইন্তেকাল করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে মাসে সাদেক হোসেন খোকা সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে যান।