ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাকে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জুরাইন কবরস্থানে দাফন করতে চায় পরিবার। খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনের বরাত দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, সাদেক হোসেন খোকার পরিবারের সদস্যরা তাঁর মরদেহ দেশে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জুরাইনে বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
শায়রুল কবির খান বলেন, ইশরাক ইতিমধ্যে তাঁর বাবার মরদেহ দেশে আনার জন্য ট্রাভেল পারমিটের অনুমতি পেতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ মিশনে যোগাযোগ করেছেন। সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ কোন দিন দেশে আনা হবে, তা তাঁর পরিবার ঠিক করবেন বলে জানান শায়রুল।
সাবেক মন্ত্রী সাদেক হোসেন নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে বাংলাদেশ সময় সোমবার বেলা আড়াইটায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন গত ১৮ অক্টোবর থেকে নিউইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ২০১৭ সালে তাঁদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
১৯৫২ সালের ১২ মে ঢাকায় জন্ম নেওয়া সাদেক হোসেন খোকা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ছিলেন গেরিলা যোদ্ধা। তিনি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন এবং পরে বিএনপিতে যোগ দেন ও দলের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি হন। ১৯৯১ সালে সূত্রাপুর-কোতোয়ালি আসন থেকে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। পরে তিনি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হন। সাদেক হোসেন ১৯৯৬ সালেও সাংসদ নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সাদেক হোসেন একই আসন থেকে আবারও সাংসদ হন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে ২০০২ সালে তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি প্রায় ৯ বছর ধরে এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের কয়েক দিন আগে সাবেক মন্ত্রী সাদেক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০১৪ সালের ১৪ মে চিকিৎসা করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি।