দেশজুড়ে চলনবিলের শুটকির কদর

চলনবিলে গড়ে উঠেছে প্রায় ৩ শতাধিক দেশীয় প্রজাতির মাছের শুটকির চাতাল। আর এ সকল চাতালে কাজ করছেন এ এলাকার শ্রমজীবি নারী-পুরুষ।

শীত মৌসুমকে সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে চলনবিল অঞ্চলের শুটকি পল্লীগুলো। ধুম পড়েছে স্বাদু পানির মাছ শুকানোর। তবে এ বছর চলনবিলে পানি কম থাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ কম এবং পুঁজি আর সঠিক বাজার না থাকার কারণে লাভবান হতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, মৎস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উলাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রয়েছে শুটকি তৈরির চাতাল। চলনবিলের বিভিন্ন হাট-বাজারে ছোট বড় কাঁচা মাছ কিনে শুটকির চাতালে নিয়ে গিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় এ শুটকি। চলনবিলের শুটকির চাতালগুলোতে বর্তমানে মাছ কাটা, রোদে শুকানো, বাছাই করা, প্যাকেটজাতকরণে নারী-পুরুষরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন।

তাড়াশ উপজেলার মহিষলুটি এলাকার শুটকি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, তাহের আলী, মোকশেদ আলীসহ অনেকে জানান , চলনবিলে দেশীয় প্রজাতির মাছের শুটকি তৈরির অসংখ্য চাতাল গড়েওঠে বর্ষা মৌসুমে। এ সব চাতালে টেংরা, পুঁটি, খলসে, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, গুচি, চিংড়ী, চাঁন্দা, বোয়াল, শৈল মাছসহ ছোট বড় অসংখ্য মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ শুকিয়ে শুটকি তৈরি করা হয়ে থাকে। এখানকার তৈরি শুটকি সৈয়দপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এমনকি বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও প্রকারভেদে ৩০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়।

ব্যবসায়ীরা আরো জানান, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ শুটকি বিদেশে রফতানি হলেও কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ শিল্প প্রসারে স্থানীয়ভাবে বাজার স্থাপন করা হলে লাভবান হবেন এমনটাই আশা শুটকির চাতাল মালিকসহ স্থানীয়দের।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হাসান মাহমুদুল হক জানান, শুটকির চাতাল মালিক ও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে মৎস্য বিভাগ।

তিনি বলেন, চলনবিলে মিঠা পানির দেশীয় প্রজাতির মাছের শুটকির যতো চাতাল রয়েছে তা দেশের আর কোথাও নেই। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে এ শুটকির চাতাল থেকে উৎপাদিত শুটকি বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব।

Scroll to Top