পদ হারালেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান পদ হারালেন ওমর ফারুক। ক্যাসিনো–কাণ্ডে যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের যুক্ত থাকার অভিযোগের মধ্যেই ওমর ফারুককে সংগঠনের শীর্ষ পদ থেকে বাদ দেওয়া হলো। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর দু-এক দিন সবর থাকলেও পরে সবকিছু থেকে অনেকটা দূরে সরে যান ওমর ফারুক। তাঁকে ছাড়াই সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সভা হয়েছে।

আজ রোববার রাতে গণভবনে যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

বৈঠক শেষে গণভবন থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান।

ওমর ফারুক সাত বছর ধরে সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এখন তাঁর বয়স ৭১ বছর।

সদ্য–পদ–হারানো নেতা ওমর ফারুক তামাকের বিকল্প ‘টেন্ডু পাতা’ থেকে শুরু করে তৈরি পোশাকের ব্যবসা করেছেন। ঋণখেলাপি হয়েছেন। রাজনীতিতেও দীর্ঘ সময় সুবিধা করতে পারেননি। বিড়ি শ্রমিক লীগ, জাতীয় পার্টির যুব সংগঠন, আওয়ামী লীগ করেও লম্বা সময় ছিলেন পেছনের কাতারে। তবে যুবলীগ তাঁকে নিয়ে গেছে শীর্ষে। যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর শোধ করেছেন পুরোনো ব্যর্থতার দেনা।

ভাগ্যগুণে ওমর ফারুক চৌধুরী এমন সাফল্য পেয়েছেন বলে মনে করেন যুবলীগের অনেক নেতা। তাঁরা জানান, ২০০৩ সালে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ওমর ফারুক। এর আগের কমিটিতে কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আর ২০১২ সালে হন চেয়ারম্যান। এরপর থেকে যুবলীগে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের শীর্ষ পদ পাওয়ার পর সম্পদ নিলামে ওঠার পরিস্থিতি সামলে নিয়েছেন এবং ধনাঢ্য জীবন যাপন করছেন; যদিও তাঁর দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা নেই।

ওমর ফারুক ৬৪ বছর বয়সে হয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান হন। অথচ যুবলীগের ইতিহাসে এর আগে ৫০ বছরের বেশি বয়সী কেউ চেয়ারম্যান হননি। ১৯৭২ সালের ​নভেম্বরে শেখ ফজুলল হক মণি যখন যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩২ বছর।

১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া ওমর ফারুক চৌধুরী সত্তরের দশকে চট্টগ্রাম জেলা বিড়ি শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এইচ এম এরশাদ ক্ষমতায় আসার সময় ওমর ফারুক শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জাতীয় পার্টির প্রয়াত নেতা নাজিউর রহমান (মঞ্জু) এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য হলে ওমর ফারুক দল বদল করেন। জাতীয় পার্টির অঙ্গ–সংগঠন যুব সংহতির চট্টগ্রাম উত্তর জেলার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ওমর ফারুক চৌধুরী নাজিউর রহমানের ভায়রা এবং শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভগ্নিপতি।

এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলে তিনি সদস্য হন। ১৯৯৭ সালে তিনি উত্তর জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ হন।

Scroll to Top