কাশ্মীরে অসহযোগ আন্দোলন চলছে

কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ভারত।তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করে টেলিফোন, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এলএএইচডিসি সরকারি নতুন বিভাগ সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অসহযোগ কর্মসূচি পালন করেছে। একই সঙ্গে নতুন বিভাগের অংশ হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।

উপত্যকার সব জেলা অফিস কারগিল এবং লেহ শহরে অবস্থিত। এসব অফিস লাদাখ স্বায়ত্বশাসিত পাহাড় উন্নয়ন পরিষদের অধীন। তবে নতুন বিভাগ তৈরির এই প্রস্তাবনা সরকারি প্রশাসনের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, লেহ শহরে লাদাখ বিভাগের প্রধান কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা কারগিলের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত হানছে। তবে সার্বজনীনভাবে এটার সমাধান করা হয়েছে যে, এলএইচডিসি কারগিল সরকারের আদেশ পর্যালোচনা ও সংশোধন করার পক্ষে জোরালো পরামর্শ দেবে।

তবে সরকারের ওই আদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধনী না আনা পর্যন্ত এলএইচডিসি কারগিল গণ-অসহযোগ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত লাদাখে সরকারি-অফিস আদালতে আদেশ অমান্য কর্মসূচি চলবে।

নতুন বিভাগ তৈরির প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা গত তিনদিন ধরে কারগিলের সব সরকারি কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন। কারগিলে বর্তমানে চরম প্রতিকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মাঝেও হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছেন। এমনকি মঙ্গলবার রাতভর খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

লাদাখের নিয়োগকৃত নতুন বিভাগীয় কমিশনারকে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়নি বিক্ষোভকারীরা। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে তিনি লেহ শহরে ফিরে যেতে বাধ্য হন।

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে। সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেহ শহর সফরে যান। তার ওই সফর শেষের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে কাশ্মির বিভাগ থেকে লাদাখ নামে আলাদা বিভাগ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

২০১৪ সালে লাদাখের পার্লামেন্টে বিজেপি জয় পায়। কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকজন সাংসদ বিজেপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে। তবে আসন্ন নির্বাচনের আগে হারানো শক্তি ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি।

লাদাখকে কাশ্মির থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্তকে লেহ শহরের বাসিন্দারা স্বাগত জানালেও মানতে নারাজ কারগিলের জনগণ।

Scroll to Top