কাশ্মিরিদের অধিকার খর্ব হয়েছে, ভারতীয় হিসেবে আর গর্ব করি না : অমর্ত্য সেন

ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন। রাজ্যটি ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করায় কাশ্মিরের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। সোমবার এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অমত্য সেন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশেষ মর্যাদা বাতিলে কাশ্মিরের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারতের সম্মান ম্লান হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। খবর এনডিটিভির।

৮৫ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ বলেন,‘গোটা বিশ্বে গণতান্ত্রিক আদর্শ অর্জনের জন্য এত কিছু করেছে ভারত। তবে এখন আর আমি একজন ভারতীয় হিসেবে এই সত্য নিয়ে গর্বিত নই যে ভারতই গণতন্ত্রের পক্ষে প্রথম প্রাচ্যের দেশ ছিল। কেননা যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাতে আমরা সেই খ্যাতি হারিয়ে ফেলেছি।’

কাশ্মির সংকট সমাধানের উপায় প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন,‘আমি মনে করি না যে গণতন্ত্র ছাড়া কোনওভাবে কাশ্মির সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’

৩৭০ ও ৩৫এ ধারা বাতিলের ফলে অন্যান্য রাজ্যের লোকেরা জম্মু ও কাশ্মিরে জমি কিনতে পারবে। এ বিষয়ে ড. সেন বলেন,‘রাজ্যের জনগণের (জম্মু ও কাশ্মির) কথা ভেবেও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। এটি এমন একটি বিষয় যেখানে কাশ্মিরিদের বৈধ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে কারণ যে এটি তাঁদের জমি।’

জম্মু ও কাশ্মিরের মূলধারার রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করার বিষয়েও সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অমর্ত্য সেন বলেন,‘জনগণের নেতাদের কণ্ঠস্বর না শুনে আপনারা ন্যায়বিচার করতে পারেন বলে আমি মনে করি না এবং যদি আপনি হাজার হাজার নেতাকে সংযত রাখেন এবং তাদের অনেককে কারাগারে আটকে রাখেন… তাহলে আপনি গণতন্ত্রের সেই বৈশিষ্ট্যকে দমন করছেন যা গণতন্ত্রকে সফল করে তোলে।’

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা বাতিলের দিন তিনেক আগে থেকেই কাশ্মিরে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয় ভারত। এ ছাড়া গোটা রাজ্যজুড়ে কারফিউ জারি করার ফলে এখনো স্তব্ধ হয়ে আছে সেখানকার জনজীবন। সর্বত্র ভারতীয় সেনাদের টহল। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে অনেকে নিহত হন।

Scroll to Top