২২ আগস্ট ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিবে : মিয়ানমার

মিয়ানমার আগামী ২২ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে দেশটি তিন হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার একটি তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের পর চ‚ড়ান্ত করেছে। মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিন্ট থো গতকাল রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মিন থিন বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন, প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাংলাদেশ সীমান্তে নির্মাণ করা ট্রানজিট ক্যাম্পগুলো পরিষ্কারের জন্য বাড়তি স্টাফ পাঠানো হচ্ছে। এই ক্যাম্পগুলো বেশ কয়েকমাস খালি পড়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রোহিঙ্গারা রাখাইন ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানানোয় সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা একাধিকবার কক্সবাজার গিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করা চেষ্টা করেছে। কিন্তু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া প্রত্যাবাসনে সাড়া দেয়ন।

এদিকে আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, সার্বিক বিষয়টি মিয়ানমারের ওপর নির্ভর করেছে। কেননা তারাই এ সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। রাখাইনে ফেরার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার সঙ্কট রয়েছে। এই অবিশ্বাস কাটাতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সাথে বাংলাদেশ জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমার কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ড. মোমেন বলেছেন, বন্ধু রাষ্ট্রগুলো আমাদের জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নেইপিডোতে (মিয়ানমারে রাজধানী) রাজনৈতিক সদিচ্ছার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। আমরা আশা করি জাতিসঙ্ঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক মাসে রোহিঙ্গা ইস্যুর সাথে জড়িত অংশীদারদের সাথে আলাপ করেছি। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সহায়তা করতে অংশীদাররা আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। বাংলাদেশ ইস্যুটি নিয়ে মিয়ানমারের সাথে দ্বিপাক্ষিকভাবেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার অঙ্গিকারাবদ্ধ। তিনি বলেন, মিয়ানমারে সফরে যাওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমি এ আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছি।

২০১৭ সালে আগস্টে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে আরো চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল।

Scroll to Top