রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ভয়ংকর আশঙ্কাজনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। বারবার ইনস্যুলিন পরিবর্তন এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরেও কোনো অবস্থাতেই তার সুগার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোনো কোনো সময় এটি ২৩ মিলিমোল পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খাবারের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দেওয়াতে শরীরের ওজন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে।যথাযথ চিকিৎসার বিষয়ে আমরা বারবার দাবি করা সত্বেও তাকে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বিশিষ্ট দেশের কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। ব্যথার কারণে রাত্রে তার ঘুম হচ্ছে না এবং সারাক্ষণ তিনি অস্থির থাকছেন।দ্রুত তার মুক্তি না দিলে প্রাণহানীর আশঙ্কা করছি আমরা।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কারাগারে নেওয়ার সময় সুস্থ বেগম জিয়াকে এখন হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। দেশবাসী দেশনেত্রীর জীবনের পরিণতি নিয়ে এখনও অজানা আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। সরকার তার জীবন নিয়ে গভীর মাস্টারপ্ল্যানে ব্যস্ত। এই মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে-গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তুপের ওপর জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অন্যের কাছে বিকিয়ে দেওয়া। খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আদালতের কথাতেই মনে হচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কিছু হবে না।
‘বেগম জিয়ার আইনজীবীরা যখন আদালতে শুনানি করেন তখন তারা বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদেরসহ শীর্ষ নেতারা বলেছেন খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দেওয়া হবে না। আদালত প্রতি উত্তরে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার কথা আর ওবায়দুল কাদেরের কথা এক নয়, ওবায়দুল কাদেরের কথা রাস্তার কথা।’ এতে পরিস্কার প্রমাণিত যে, শেখ হাসিনাই কারাগারে বেগম জিয়াকে আটকিয়ে রেখেছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার জামিনও মিলবে না।’
রিজভী বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশ উন্নত হচ্ছে বলেই ডেঙ্গু হচ্ছে, যে দেশ যত বেশি উন্নত হচ্ছে সেদেশে তত বেশি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু এলিট শ্রেণির মশা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও কোলকাতা শহরে ডেঙ্গু দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ যেহেতু এখন উন্নত হচ্ছে, তাই এখানেও ডেঙ্গু হচ্ছে।’ মন্ত্রীর এহেন বক্তব্যগুলো শুনে এগুলোকে ‘টক অব দি সেঞ্চুরি’ বলব নাকি ‘শক অব দি সেঞ্চুরি’ বলব, এ নিয়ে দ্বিধায় আছি।
রিজভী বলেন, মশা নিধনের টাকা লুটেপুটে খেয়েছে মেয়ররা। সুতরাং আর্থিক উন্নতি হয়েছে মন্ত্রী-মেয়রদের, দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি। ডেঙ্গু নিয়ে স্ববিরোধী, বিপরীতধর্মী কথাবার্তা, রাতের কথার সঙ্গে সকালের কথার গরমিল, ইত্যাদি এ ধরণের কথা থেকে সিকি-আধুলি ও গোটা মন্ত্রী কেউই কম যাচ্ছেন না।
ওবায়দুল কাদের সাহেব ক’দিন আগে বলেছেন যে, সবাই ঈদে বাড়ি যাবেন কোনো অসুবিধা নাই। গতকাল আবার বলেছেন, বাড়ি যাবার আগে রক্ত পরীক্ষা করে যাবেন। বিবিসি’র সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এডিস নিয়ে মিডিয়ার বাড়াবাড়িতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মূলতঃ মেয়র থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে ঠাট্টা মশকরা করছেন। অথচ সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে কোনো ঠাঁই নেই।