জেমস ও আইয়ুব বাচ্চুর গান দিয়ে শেষ হচ্ছে নোবেলের ‘সা রে গা মা পা’

পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি টিভি চ্যানেল জি বাংলার আয়োজনে গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হয় ‘সারেগামাপা ২০১৮-১৯’ প্রতিযোগিতা। আজ রোববার শেষ পর্ব প্রচারের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের আয়োজন। শেষ পর্বে বাংলাদেশের শেষ প্রতিযোগী হিসাবে দেখা যাবে মাঈনুল আহসান নোবেলকে। জানা গেছে, আজ প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুর করা আর জেমসের কণ্ঠে জনপ্রিয় হওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি দিয়ে শেষ হবে নোবেলের ‘সারেগামাপা’র সফর। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি আরও গেয়েছেন আইয়ুব বাচ্চুর ‘সেই তুমি’ গানটি।

চূড়ান্ত পর্ব প্রচার হয়নি, তবে এরই মধ্যে ‘সারেগামাপা’র চূড়ান্ত পর্বের ফলাফল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়। জানা গেছে, এবার আসরে নোবেল প্রীতমের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় রানারআপ অর্থাৎ তৃতীয় হয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন হন অঙ্কিতা। বিচারকদের রায়ে এই ফল হলেও দর্শকের ভোটে সেরা নোবেল। তিনি ‘মোস্ট ভিউয়ার চয়েস’ বিজয়ী হয়েছেন।

\"‘সারেগামাপা’র‘সারেগামাপা’র মঞ্চে নোবেল২৯ জুন রাতে কলকাতার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে এই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের একটি ছবি পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাতে দেখা যায়, প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন অঙ্কিতার হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কার হাতে পাশে দাঁড়িয়েছে আছেন প্রথম রানারআপ গৌরব সরকার ও স্নিগ্ধজিৎ। তাঁদের পেছনে নোবেল ও প্রীতম।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, এবার ‘সারেগামাপা’য় প্রথম হয়েছেন অঙ্কিতা। যৌথভাবে ১ম রানারআপ গৌরব ও স্নিগ্ধজিৎ আর ২য় রানারআপ হয়েছেন প্রীতম ও মাঈনুল আহসান নোবেল। তবে তা নিয়ে নোবেল কিংবা আয়োজকদের কেউ তখন মুখ খোলেননি। তবে আজ রাতে জানা যাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ফলাফল ঠিক না ভুল।

\"প্রিন্সপ্রিন্স মাহমুদের জন্মদিনে হাজির হন মাঈনুল আহসান নোবেল‘সারেগামাপা’ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে ভারতের কলকাতা আর বাংলাদেশে ব্যাপক পরিচিতি পান মাঈনুল আহসান নোবেল। সেখানে তিনি প্রিন্স মাহমুদের লেখা ও সুর করা পাঁচটি গান গেয়েছেন। প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে ‘বাবা’র মতো জনপ্রিয় গানের কারণেই দ্রুত পরিচিতি পান নোবেল। এরপর প্রিন্স মাহমুদের কথা সুরে ‘মা’ গানটি তাঁকে আরও বেশি আলোচনায় নিয়ে আসে। এরপর তিনি ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’ এবং ‘হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা’ গানগুলো গেয়েছেন।

আজকের অনুষ্ঠানে তিনটি গান গেয়েছেন নোবেল, এর মধ্যে অন্য দুটি গান হচ্ছে আইয়ুব বাচ্চুর ‘সেই তুমি’ এবং প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’। জি বাংলার নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং বিজ্ঞাপনে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটির অংশবিশেষ প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে দেখা গেছে, এক হাতে মুঠোফোন আর অন্য হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে গানটি পরিবেশন করেন তিনি। কিন্তু ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ গানটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার করেনি জি বাংলা। তবে অনুষ্ঠানের রেকর্ডিংয়ের সময় গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে নোবেলকে ‘বাংলাদেশ’ গানটি করতে দেখা গেছে। অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একজন জানান, পরিচালকের সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রোমোতে (বিজ্ঞাপন) গানটি প্রচার করেননি।

\"গোপালগঞ্জেরজেমসের গাওয়া ‘বাংলাদেশ’ গানটি ২০০০ সালে ‘পিয়ানো’ নামের একটি মিশ্র অ্যালবামে প্রথম প্রকাশ হয়। শুরু থেকেই গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এবারই প্রথম দেশের বাইরে কোনো প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের কোনো সুরকারের পাঁচটি গান গেয়েছেন প্রতিযোগীরা।

আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জি বাংলায় ‘সারেগামাপা’ অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে। চূড়ান্তপর্বে অংশ নেওয়া শিল্পীদের একাধিক গান গাইতে দেখা যাবে।

এবার ‘সারেগামাপা’ প্রতিযোগিতায় ভারত থেকে নির্বাচিত ৪৮ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে অংশ নেন অবন্তি সিঁথি, তানজীম শরীফ মুগ্ধ, রোমানা ইতি, মেজবা বাপ্পী, আতিয়া আনিসা, মন্টি সিনহা ও নোবেল। বাকিরা নানা ধাপে ছিটকে গেলেও গোপালগঞ্জের ছেলে নোবেল জায়গা করে নেন চূড়ান্তপর্বে। পুরো আয়োজনে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন শ্রীকান্ত আচার্য, শান্তনু মৈত্র ও মোনালি ঠাকুর।

গোপালগঞ্জের ছেলে মাঈনুল আহসান নোবেল বড় হয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়। লেখাপড়া করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতে। মাথায় গানের পোকা ঢোকে কলকাতায়। মাত্র ৬০০ টাকায় পুরোনো সিগনেচার ব্যান্ডের গিটার কিনে তা দিয়েই শুরু করেন সংগীতচর্চা। কলকাতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করে ২০১৪ সালে ঢাকায় ফেরেন নোবেল। এভাবে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা করতে করতে নোবেলের সঙ্গে গানের প্রেম পোক্ত হয়ে যায়।

Scroll to Top