সন্তানের জন্য মায়ের আর্জি। কিন্তু তা দিতে নারাজ সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। সীমান্ত পাড়ে এসে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছেন ওই নারী। কাতর আহ্বানের সঙ্গে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন ৬ বছরের ছেলেকে। কান্না চাপতে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে সামলানোর চেষ্টা করছেন নিজেকে। সামনে দাঁড়ানো নিরাপত্তারক্ষীর কাছে একটাই আর্জি করছেন ওই মা, তাকে যেন সীমান্ত পার করতে দেওয়া হয়। এমকি নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে-পা ও ধরেছেন ওই নারী। এই কঠিন মুহূর্ত রয়টার্সের বিখ্যাত চিত্র–সাংবাদিক জোসে লুইস গোনজালেজ ক্যামেরা বন্দি করেছেন।
ছবি তোলা হয়েছে মেক্সিকো–আমেরিকা সীমান্তে। মহিলার নাম লেটি পেরেজ। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ভিটে গুয়াতেমালা ছেড়েছেন ওই মহিলা। লক্ষ্য একটাই সীমান্ত অতিক্রম করে আমেরিকা যেতে হবে। ছেলেকে একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতেই হবে। কিন্তু সীমান্ত পেরনোর আগেই মেক্সিকান ন্যাশনাল গার্ডের মুখোমুখি হন মা এবং ছেলে। ছোট্ট ছেলেটির নাম অ্যান্টনি ডিয়াস। যে অপলক দৃষ্টিতে মায়ের কাতর আর্তি প্রত্যক্ষ করছে। অথচ গোটা বিষয়টি সে জানে না, বোঝেও না।
জানা গেছে, দেড় হাজার মাইল পেরিয়ে এসেছেন গুয়াতেমালার ওই মা এবং ছেলে। আর মাত্র একটু খানি রাস্তা। তারপরেই রয়েছে ছেলের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার সমস্ত সুযোগ। তাই তীরে এসে তরী ডোবাতে চান না ওই মা।
ছেলের অ্যান্টনির জন্য যেভাবেই হোক পেরোতে হবে সীমান্ত। তিনি যে মা! সেনার পায়ের সামনেই হাঁটু মুড়ে বসে পড়েছেন তিনি। ছেলেকে আঁকড়ে ধরে করছেন আর্জি। আর নিয়ম মেনেই কর্তব্যে অবিচল নিরাপত্তারক্ষী।
তাই হাজার করুণ আর্জিতেও মন গলেনি নিরাপত্তারক্ষীর। নিজের দায়িত্ব পালনে অনড় তিনি। এক মায়ের কাতর আর্জিতেও সারা দেননি তিনি। সীমান্ত পেরোতে পারেননি ওই গুয়াতেমালান মহিলা এবং তার ছেলে।
পরিচয় গোপন রেখে মেক্সিকান সেনা শুধু জানান, ‘তিনি তার দায়িত্ব পালন করছেন।’
ইত্তেফাক