রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ১০৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার অভিযোগে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ফারুক হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার ১১০ জন আসামির মধ্যে যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও মহাসচিব আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদসহ কয়েকজনের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরসহ ৬জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাঈদীকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সরাসরি আদালতে নেওয়া হয়। সাঈদীর হাজিরার জন্য গোটা আদালতপাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে পুলিশ। এছাড়া আদালত চত্বরে অবস্থান নেয় পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট ক্রাইম রেসপন্স টিম-সিআরটি এবং র্যাব।
সূত্র জানায়, শুনানিতে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদলতে আবেদন করেন। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানান নি। এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম জানান, ফারুক হত্যার আগের দিন জামায়াতের এক সমাবেশে সাঈদী ছাত্রলীগ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু হত্যার করার কথা বলেননি, অথবা নির্দেশও দেননি। এমন কি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে তিনি চিনতেনও না। কাজেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজী শওকত সালেহীন বলেন, ওই সমাবেশে সাঈদী ছাত্রলীগ কর্মীদের হত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগই আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। উক্ত সংঘর্ষ চলাকালে সশস্ত্র ছাত্রশিবির কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর পার্শ্ববর্তী সৈয়দ আমীর আলী হলের ম্যানহোলে ফেলে দেয়। এ ঘটনার পরদিন তৎকালীন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু নগরীর মতিহার থানায় মামলা করেন।
ইত্তেফাক