পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে হাতুরুকে

বাংলাদেশের মাটিতে ২০১৮ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিত সিরিজ দিয়েই শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছিল চান্দিকা হাতুরুসিংহের। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজ শুরুর প্রাক্কালেই তিনি বিদায়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছেন।

তামিম ইকবালের দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষেই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে চান্দিকাকে। দেশটির ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) আর এই কোচের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না।

এসএলসির এক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক মোহন ডি সিলভা এক লিখিত নোটিশ পাঠিয়েছেন হাতুরুসিংহেকে। সেখানে সাফ বলা আছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে। ৫১ বছর বয়সি হাতুরু গেল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব ছাড়ার পর যোগ দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান শিবিরে। আশা ছিল বাজে পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট তার ওপর ভর করে আবারো মাথা তুলে দাঁড়াবে।

কিন্তু, হয়েছে তার উল্টোটা। লঙ্কান দলের পারফরম্যান্স আরো নিম্নমুখী হয়েছে। ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে নামতে নামতে তাদের অবস্থান এখন অষ্টম। আর এই ব্যর্থতার শেষটা হয়েছে বিশ্বকাপ দিয়ে। নয় ম্যাচে তিন জয় আর চার হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে থেকে শেষ করে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো আসর।

এখানেই শেষ নয়, বোর্ডের কর্তাদের সাথে এমনকি দলের শীর্ষ ক্রিকেটারদের সাথেও কোচের বনিবনা হচ্ছে না—এমন খবর লঙ্কান গণমাধ্যমগুলো অনেকবারই ফলাও করে প্রচার করেছিল। একবার তো ভিনদেশে সিরিজ চলাকালে তাকে দেশে ফিরে আসতেও বাধ্য করেছিল এসএলসি। তখনই বোঝা যাচ্ছিল, খুব বেশিদিন শ্রীলঙ্কায় টিকতে পারবেন না স্বদেশি এই কোচ।

বাংলাদেশের হয়ে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। সে নিয়ে ঐ সময় ব্যাপক বিতর্ক হয়। শ্রীলঙ্কা দলের হয়ে তার মেয়াদ এই বছরের শেষ পর্যন্ত। হাতুরুসিংহে নিজেও চাইছিলেন মেয়াদটা শেষ করেই নতুন চাকরি খুঁজবেন। কিন্তু, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। এবার হাতুরুসিংহেকে বাধ্য হয়ে মেয়াদ শেষ হবার আগেই ‘টাটা’ বলে দিতে হবে।

বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জের ধরে শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী হারিন ফার্নান্দো আগে অবশ্য বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা দলের গোটা কোচিং স্টাফ দলের সবাইকেই ছাঁটাই করা হবে। আর এর প্রথম কোপটা পড়লো হাতুরুসিংহের ওপর।

গুঞ্জন আছে, আবারো বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ব্যাপারে তার আলোচনা চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাথে। স্টিভ রোডসের বিদায়ের পর বাংলাদেশেও এখন কার্যত কোনো কোচ নেই। এমন অবস্থায় হাতুরুকে ফিরিয়ে আনা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর ব্যাটেবলে হয়ে গেলে প্রতাপশালী এই কোচকে বেশিদিন চাকরিশূন্য অবস্থায় থাকতে হবে না।

ইত্তেফাক

Scroll to Top