তিন তালাকের পথে হাঁটেননি এই মুসলিম তারকারাও

গতকাল মঙ্গলবার এক ঐতিহাসিক রায়দানে তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের এই যুগান্তকারী রায়ে খুশির হাওয়া ইসলাম ধর্মাবলম্বী মহিলাদের মধ্যে। বহুদিনের লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, মুখ পুড়েছে মুসলিম পারসোনাল ল’ বোর্ডের। তবে ভারতে এমন বহু তারকা রয়েছেন যাঁরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও শরিয়তের বিপক্ষে গিয়েছেন। তিন তালাকের পথে না গিয়ে আইনতই নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে বিচ্ছেদ করেছেন। এই প্রতিবেদনে রইলো এমনই কিছু তারকাদের কথা, যাঁরা তিন তালাকের পথে হাঁটেননি।

আমির খান-রিনা দত্ত: আমির ১৯৮৬ সালে প্রেমিকা রিনার সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। ১৫ বছর একসঙ্গে ঘর করার পর ২০০২ সালে দুজনেই বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। দুই সন্তান জুনেইদ ও ইরাও তা মেনে নেয়। কিন্তু তিন তালাক নয়, আইন মেনেই বিচ্ছেদ হয় আমির-রিনার। রিনার সঙ্গে ডিভোর্সের পর ২০০৫ সালে কিরণ রাওয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় আমিরের।

আরবাজ খান-মালাইকা আরোরা: সলমনের ভাই আরবাজ ও তাঁর স্ত্রী মালাইকার চলতি বছরের ১১ মে ডিভোর্স হয়। তবে তিন তালাক নয়, আইনতই তাঁরা বিচ্ছেদ করেন। ১৯৯৮ সালে বিয়ে করার পর ১৮ বছর একসঙ্গে তাঁরা সংসার করেছিলেন।

সইফ আলি খান-অমৃতা সিং: ১৯৯১ সালে বিয়ে করেন মনসুর আলি খান পটৌডি ও শর্মিলা ঠাকুরের ছেলে সইফ ও অভিনেত্রী অমৃতা সিং। সইফের থেকে বয়সে বেশ কিছুটা বড় অমৃতা তখন কেরিয়ারের মধ্যগগনে। তবুও সব কিছু ছেড়ে একসঙ্গে স্বামীর ঘর করতে শুরু করেন অমৃতা। কিন্তু সম্পর্কে ভাঙন ধরে ২০০৪ সালে। ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ করে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তাঁরা। দুজনের সন্তান সারা আলি খান এবং ইব্রাহিম খান বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ মেনে নিয়েছেন। ২০১২ সালে সইফ বিয়ে করেন করিনাকে। সইফ নিজেই তিন তালাক প্রথার বিরুদ্ধে ছিলেন। তাই আইনত বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি।

ফারহান আখতার-অথুনা ভবানী: অভিনেতা-নির্মাতা ফারহান আখতার হেয়ার স্টাইলিস্ট অথুনাকে বিয়ে করেন ২০০০ সালে। কিন্তু সেই বিয়ে টেকে মাত্র ৭ বছর। দুজনেই আইন মেনে ডিভোর্স নেন।

জাভেদ আখতার-হানি ইরানি: ফারহানের বাবা বিখ্যাত লেখক-সুরকার জাভেদ আখতারও তাঁর প্রথম স্ত্রী হানি ইরানিকে আইনত ডিভোর্স দেন। তিনি নিজেও তিন তালাক প্রথার বিরোধিতায় বহুবার সরব হয়েছেন। ১৯৮৪ সালে জাভেদ শাবানা আজমিকে বিয়ে করেন।

আদনান সামি-জেবা বখতিয়ার: বিখ্যাত সংগীতশিল্পী আদনান বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক হলেও অতীতে পাকিস্তানের নাগরিক থাকাকালীন ‘হিনা’ ছবি খ্যাত অভিনেত্রী জেবা বখতিয়ারকে ১৯৯৩ সালে শরিয়ত মেনে বিয়ে করেন। কিন্তু চার বছর পরই বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন দুজনে। তবে তিন তালাক নয়, আইন মেনে।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ সেলেবই শরিয়তের তোয়াক্কা না করে আইনি পথেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণার পরই মৌলবাদীরা যেমন গেল গেল রব তুলেছেন, তাতে কিন্তু তারকাদের কমই কেয়ার। দাম্পত্য জীবনের অবসানের ক্ষেত্রে তাঁরা শরিয়ত নয়, দেশের আইনব্যবস্থার প্রতিই আস্থা রেখেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম

Scroll to Top