রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শুক্রবার সকালে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২.৬০ সে.মি) ২৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী আমিনুর রহমান।
প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৪ হাজার পরিবার। বিনবিনা এলাকায় তিস্তার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান গঙ্গাচড়ার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা ব্যারাজের ভাটি এলাকা ঊপজেলার নোহালী ইউনিয়নের নোহালী, চর নোহালী, বাগডোহরা, মিনার বাজার, চর বাগডোহরা ও নোহালী সাপমারী, আলমবিদিতর ইউনিয়নের হাজীপাড়া ও ব্যাংকপাড়া, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, উত্তর চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনা মাঝের চর, সাউদপাড়া ও বাবুরটারী বাঁধেরপাড়, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ধামুর ও গান্নারপাড়, লক্ষ্মিটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, পূর্ব ইচলী, জয়রামওঝা, পশ্চিম ইচলী, মহিপুর ও কলাগাছি, গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, গাউছিয়া,জয়দেব, রমাকাšত, একনাথ ও কালির চর এবং মর্নেয়া ইউনিয়নের আলাল চর, তালপট্টি চর , হাজির পাড়া , নরসিংহ , মর্নেয়া চর তলিয়ে গেছে। এ সব এলাকায় প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কোলকোন্দ ও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে পানিবন্দির পরিমান বেশি।
সরেজমিনে শুক্রবার বন্যা কবলিত এলাকা গিয়ে দেখা যায়, চরের বাড়িগুলোর চারপাশে শুধু পানি আর পানি। হঠাৎ করে আসা পানিতে বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু জানান, শুধু তার ইউনিয়নেই দেড় হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এসে জানান, তার ইউনিয়নে ৫’শ এবং মর্নেয়া ইউনিয়নে ১ হাজার , গজঘন্টা ইউনিয়নে ৫’শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত বাগেরহাট, ও বিনবিনা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলীমা বেগমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। তিস্তার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান জানান, উজানে ভারত তাদের ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় নদীতে পানি বেড়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পানি গতকাল বিকালে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০) ২৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।