অপারেশন শেষে আইসিইউতে শাহীন

সাতক্ষীরায় ভ্যান ছিনতাইয়ের সময় দুর্বৃত্তদের আঘাতে মাথা ফেটে যাওয়া কিশোর চালক শাহীনের অপারেশন শেষে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। রবিবার (২৯ জুন) ভোর ৪টার দিকে অপরেশন শেষ করেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহীনের বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের প্রতিবেশী দেবাশীশ আইচ। তিনি জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শাহীনের পালস ভালো আছে। তবে ব্রেইনে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। মাথায় রক্ত জমাট থাকার আশঙ্কায় চিকিৎসকরা তার অপারেশন করেছেন।

এর আগে, রাত ১০টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয় বলে জানান দেবাশীশ। শাহীন যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।

জানা যায়, যশোর জেলার কেশবপুরের গোলাখালি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহীন শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে ব্যাটারিচালিত ভ্যান নিয়ে বাবা-মার সংসারের জন্য রোজগারে বেরিয়েছিল। দুপুরের দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহীন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের হামজাম তলা মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়, নিয়ে যায় শাহীনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও। ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়।

পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনার আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শনিবার (২৯ জুন) তার অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে রওনা হয়।’

প্রসঙ্গত, বসতভিটে ছাড়া শাহীনদের কোনও জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কেনে তারা। পিতা-পুত্র দুই শিফটে ওই ভ্যানটি চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছিলো। শাহীনের ছোট দুই বোনের পড়া লেখাসহ সংসার চালাতো তারা। জীবিকার সেই শেষ সম্বলটিও নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা। এখন শাহীনের বেঁচে থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এর সঙ্গে আছে এনজিওর ঋণের খড়গ।

লেটেস্টবিডিনিউজ/কেএস

Scroll to Top